সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ফাইনাল
ক্রীড়া প্রতিবেদক
🕐 ১:৫৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০১৯
ক্রিকেটে যা দেখা সম্ভব, দ্বাদশ বিশ্বকাপের ফাইনালে তার সবটুকুই দেখে ফেলেছে ক্রিকেটবিশ্ব। ক্রিকেটকে যে বলা হয় গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা, সেটা এক ম্যাচেই প্রমাণ হয়েছে বহুবার। কারণ পুরো খেলাজুড়েই একবার মনে হয়েছে নিউজিল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন আবার পরক্ষণেই উল্টোটা। এর আগের এগারো আসরে এর ধারে-কাছের উত্তেজনা দেখা যায়নি। সঙ্গত কারণেই বলা হচ্ছে, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার এই ফাইনাই ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বশ্রেষ্ঠ বিশ্বকাপ। জয়ী দল অর্থাৎ ইংলিশ ক্রিকেটাররাও তেমনটাই মনে করেন। তারা তাদের অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতার বয়ান করেছেন খেলা শেষে।
ইয়ন মরগান : একটা ম্যাচে এর চেয়ে বেশি কিছু হতে পারে না। আমি কেন উইলিয়ামসনকে সহমর্মিতা জানাতে চাই যে লড়াই, যে স্পিরিট তারা দেখিয়েছে তার জন্য। খুবই কঠিন একটা ম্যাচ ছিল। চার বছরের এক যাত্রা ছিল আমাদের, বছরে বছরে আমরা উন্নতি করেছি, বিশেষ করে শেষ দুই বছরে। এখন চূড়ায় পৌঁছতে পারলাম বলে মনে হচ্ছে, বিশ্ব এখন আমাদেরই। বিশ্বকাপ হাতে তুলতে পারছি বলে আমি আনন্দে আপ্লুত।
বেন স্টোকস : আমি আসলে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। গত চার বছর যে পরিশ্রম সবাই মিলে করেছি, তারপর বিশ্বকাপ খেলে আজ চ্যাম্পিয়ন হলাম এ অনুভূতিটা অন্যরকম। নিউজিল্যান্ড সত্যিকার অর্থেই খুব ভালো দল। মানুষ হিসেবে সবাই ভালো। ওদের সঙ্গে আমি প্রচুর সময় কাটিয়েছি। এরই মধ্যে আমি কেন উইলিয়ামসনকে বলেছি, বাকি জীবন এর জন্য (ওভার থ্রো ব্যাটে লাগা নিয়ে) তোমাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।
জস বাটলার : অবিশ্বাস্য! ক্রিকেটে যা কিছু দেখা সম্ভব, তার সবই যেন দেখে ফেললাম। কেমন যেন অদ্ভুত লাগছে, ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। কী অবিশ্বাস্য একটা ম্যাচ হলো! (ব্যাটিংয়ের সময়) চেয়েছিলাম শেষ পর্যন্ত ব্যাট করে যেতে। রানরেটকে তখন সমস্যা মনে হয়নি, জানতাম স্টোকস আর আমাকে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে হবে। জুটি একটু এগিয়ে নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যা ঘটে চলল, অবিশ্বাস্য...!
লিয়াম প্লাঙ্কেট : কী দুর্দান্ত একটা দিন! এখনো ঘোরের মধ্যে আছি। কী দারুণ ফিনিশিং! নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়দের আমার টুপি খোলা অভিনন্দন। আনন্দের সাগরে ভাসছি।
জোফরা আর্চার : জানতাম সুপার ওভারটি আমাকেই করতে হবে। এখনো আমার হৃৎকম্প হচ্ছে। আমার জীবনের সেরা অর্জন এটি। টুর্নামেন্টের শুরু থেকে আমরা যেভাবে খেলেছি, ট্রফি না জিতলে নিশ্চিতভাবে হতাশ হতাম।
জো রুট : অবিশ্বাস্য লাগছে। ওয়াও! বুঝিয়ে বলা মুশকিল। কী একটা ম্যাচ গেল, কী একটা টুর্নামেন্ট খেললাম! সবাই নিজেদের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে চেষ্টা করেছে। লিগ পর্বে আমাদের কিছুটা কঠিন সময় পার করতে হয়েছিল। চাপের মধ্যেই পারফর্ম করল সবাই। আর মনে হচ্ছে চিত্রনাট্যটা বেন স্টোকসের জন্যই লেখা ছিল। ওর সময়টা খুব কঠিন যাচ্ছিল। পরিবারও অনেক ভুগেছে। ওর জন্য আমার গর্ব হচ্ছে।
জনি বেয়ারস্টো : প্রথমেই নিউজিল্যান্ডের জন্য সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। খুবই বড় ধরনের একটি ম্যাচ ছিল। জয়ের পাল্লা একবার এদিকে হেলে, তো আরেকবার ওদিকে। নিউজিল্যান্ডও টুর্নামেন্টজুড়ে নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল।
যেভাবে ওরা সুপার ওভার পর্যন্ত ম্যাচটাকে টেনে নিয়ে এসেছে, তা বিরাট ব্যাপার। আমাদের বোলিং ভালো হয়েছিল। এরপরও ওরা আমাদের চাপে ফেলে দেয়। পরিস্থিতি খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। এরপর স্টোকস আর বাটলারের জুটিটা ব্যবধান গড়ে দিল। লর্ডসে খেলা এক ব্যাপার, আর লর্ডসে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলা অনেক বড় ব্যাপার। আসলে ঠিক কী অনুভূতি হচ্ছে ভেতরে ভেতরে তা শব্দে প্রকাশ করতে পারছি না।