ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

বাকৃবির ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

ইফতে খারুল ইসলাম সৈকত, বাকৃবি
🕐 ৬:৩৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৭, ২০২৩

বাকৃবির ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

দক্ষিণ এশিয়ায় কৃষি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ হিসেবে গৌরব ও মর্যাদার ৬২ বছর পার করে ৬৩ তে পদার্পণ করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলাদেশের কৃষি শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য ভূমিকা রেখে চলেছে সেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। ব্রহ্মপুত্র নদের ধার ঘেঁষে ১৯৬১ সালের ১৮ আগস্ট প্রায় সাড়ে ১২শ একর জমির উপর গড়ে উঠেছিল দেশের কৃষি শিক্ষার এই আতুড়ঘর।

 

বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা থেকে শুরু করে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রেখে তৈরি করেছে এক অতুলনীয় ইতিহাস। দেশের কৃষিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক গবেষক থেকে শুরু করে সর্বস্তরের মানুষ। গত ৬২ বছরে বাকৃবির রয়েছে অসংখ্য গৌরবময় অর্জন। যার মধ্যে বাউ ধান-৩, ডেঙ্গুর সিরোটাইপ নির্ণয় প্রযুক্তি, মানুষ ও পশুর ব্রুসেলোসিস রোগের জীবাণু শনাক্তকরণ, ইলিশ ও ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের জিন রহস্য উন্মোচন, ক্ষতিকর এন্টিবায়োটিকের বিকল্প উদ্ভাবন, হিমায়িত ভ্রুণ হতে ভেড়ার কৃত্রিম প্রজনন, শুকনো মৌসুমে বোরো ধান চাষের প্রযুক্তি উদ্ভাবন অন্যতম।

এছাড়াও বিভিন্ন প্রকার উদ্ভিদ ও মাছের কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি আবিষ্কার, শস্য ও পশুর একাধিক জাত উদ্ভাবনের মতো কৃষির সম্প্রসারণ ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে অনন্য উচ্চতায় এখন বাকৃবি।

যার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৭, ২০১৮ ও ২০২১ সালে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় প্রথম হয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। অর্জনের ধারাবাহিকতা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন বাকৃবির সকল শিক্ষক শিক্ষার্থী। ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু এই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়েছেন। এর ফলে দেশের কৃষিতে এসেছিল এক আমূল পরিবর্তন। ইতিহাস ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এই বিশ্ববিদ্যালয় আরো হাজার বছর একই অবস্থানে থাকুক, দেশের কৃষিকে আরো সমৃদ্ধ করুক, এবং প্রতিবছর ঈর্ষনীয় সংখ্যক দক্ষ কৃষিবিদ তৈরি করুক সবার এমনই প্রত্যাশা।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানাবিধ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাকৃবি প্রশাসন। সকালে র‌্যালি, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, গাছের চারা বিতরণ, ব্রহ্মপুত্র নদে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ করা হবে। এরপর সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জন 'শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবিত প্রযুক্তি' শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রর্থনা, হল ও সংগঠনের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও পালিত হবে।

চতুর্থবর্ষের শিক্ষার্থী আল আমিন বলেন,প্রাণপ্রিয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬২ বছরের গৌরবোজ্জ্বল পথ চলায় আমি আনন্দিত। দেশের ক্রান্তিলগ্নে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশের কৃষি আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের ধারপ্রান্তে, যা কেবল দক্ষ জনবলের মাধ্যমেই সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার কারিকুলামকে আরও সময়োপযোগী করতে সকলকে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে হবে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাকৃবি উপাচার্য ড. এমদাদুল হক চৌধুরী বলেন,বাংলাদেশের সমাজ ও অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি কৃষি। আজ ১৮ আগস্ট বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। উচ্চতর কৃষি শিক্ষা, গবেষণা ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র এবং জাতীয় আশা-আখাঙ্খার প্রতীক বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আজ ৬৩তম বর্ষে পদার্পণ করছে- এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্যে পরম আনন্দ ও গৌরবের।প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে এর মর্যাদা ও সুখ্যাতি। নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও বিতরণের গৌরবগাঁথা নিয়ে আমাদের প্রাণপ্রিয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৬২ বছরের গৌরবোজ্জ্বল পথ চলা।গুণগত মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা শিক্ষার্থীদের মানসম্পন্ন কর্মসংস্থান ও উন্নত জীবন ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে সহায়তা করে। আর সেই লক্ষ্যেই গত ছয় দশক ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিথযশা শিক্ষক ও গবেষকবৃন্দ নিরলসভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে জ্ঞান বিতরণ করে চলেছেন।

 
Electronic Paper