ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

রূপগঞ্জে গমের বাম্পার ফলনেও দাম নিয়ে শঙ্কা

মাহবুব আলম, রূপগঞ্জ:
🕐 ২:৩৭ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩

রূপগঞ্জে গমের বাম্পার ফলনেও দাম নিয়ে শঙ্কা

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দিন দিন কমে যাচ্ছে আবাস যোগ্য জমির পরিমান। তবে এখনো গোলাকান্দাইল, ভোলাবো,ভুলতাসহ বেশ কিছু এলাকায় মৌসুমি ফল ও ফসলের চাষাবাদ চিত্র দেখা যায়।

 

এবার ভোলাবো,গোলাকান্দাইল ও ভুলতা ইউনিয়নে ধানের পাশাপাশি উঁচু জমির বেলে দোঁয়াশ মাটিতে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে গম কাটা মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষীরা। তবে উপযুক্ত দাম পাওয়া নিয়ে তাদের চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাঁপ দেখা গেছে।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার রূপগঞ্জের গমের ফলন ভালো হয়েছে। তবে কমে গেছে আবাদ উপযুক্ত জমির পরিমাণ। স্থানীয় কৃষকদের দেয়া তথ্যে জানা যায়, একদিকে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ কারণে কৃষকরা যখন গম চাষ বিমূখ হচ্ছিল ঠিক তখন স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে গম আবাদের ব্যাপারে কৃষকদের উৎসাহিত করেছিল।

কৃষি অফিসের পরামর্শে গম চাষ অব্যহত রেখেছেন অনেকে। বর্তমানে চাল ও আটার বাজার মুল্য অনেক। তবে ক্ষেত থেকে মাড়াই করা গম কলের অভাব ও সংরক্ষণ সংকটে চাষীরা দাম পাবেননা। কিন্তু ভালো ফলন দেখে তারা এবার খুশি। তাদের দাবী, বড় বড় কোম্পানির প্যাকেটজাত আটার চাহিদা বেশি,খোলা আটার কম। ফলে স্থানীয় কৃষকরা ভালো মুল্য পায়না।

গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন এলাকায় দায়িত্বরত উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন বলেন,আমরা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের চাষাবাদে উৎসাহিত করেছি। তাদের সব রকম পরামর্শ সহায়তাসহ দেখভাল করেছি।

ফলে এবার গমের ভালো ফলন হয়েছে। তবে আবাদি জমির বেশিরভাগ শিল্পমালিকদের অধীনে চলে গেছে। এ সময় তিনি আরও বলেন, গোলাকান্দাইলে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিক তার ক্রয় করা ৩ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন। ফলন ভালো পেয়ে খুশি হয়েছেন তিনি। কিন্তু তার কারখানার পরিধি বাড়ানো হলে ওই জমিও চাষাবাদের আওতায় থাকবে না।

শিমুলিয়ার কৃষক রোমান মিয়া বলেন, উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি গম-২৫ চাষ যারা করেছেন তারা ভালো ফলন পেয়েছেন। গমচাষের শুরু থেকেই ব্লাস্ট নামের ছত্রাক জনিত রোগটির বিষয়ে এবার যথেষ্ট সজাগ ছিলেন তারা।

তাই সময়মত জমির পরিচর্যা করাসহ ব্লাস্ট ছত্রাক থেকে বাঁচতে বালাইনাশক স্প্রে করেছিলেন তারা। তাই ফলনও পেয়েছেন আশাতীত ভালো। এবার শতাব্দী, প্রদীপ, বারী ২৬, ২৮ ও কিছু বারী ৩০ জাতের গম চাষ করেছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফাতেহা নূর বলেন, উপজেলাটির জনসাধারণের এক সময় কৃষি নির্ভর জীবিকা ছিলো। এখন পূর্বাচল প্রকল্প ও আশপাশে ব্যাপক শিল্পায়ন হচ্ছে। ফলে কৃষি জমির পরিমান আগের মতো নেই।

তবুও রয়ে যাওয়া কৃষি জমিতে দাউদপুরে ধান, ভোলাবো আর গোলাকান্দাইলে গম, ভুলতায় ধান ও গম চাষ হচ্ছে। অন্যদিকে পূর্বাচলেও ব্যাপক মৌসুমি সবজি উৎপাদন হয়। এসব কৃষকদের আমরা বরাবরই উৎসাহ দিয়ে থাকি।

সূত্রমতে, উপজেলায় এবার ৯০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। যদিও গতবারের মতো এবারও গমখেতে ছত্রাক জনিত ব্লাস্ট রোগ ছিল। ঝুঁকি নিয়েও যারা এবার গম চাষ করেছেন তারা আশাতীত ভালো ফলন পেয়ে এখন বড়ই খুশি। এরই মধ্যে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গম কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে।

ভোলাবো এলাকার গম চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, এবার আমি ও আশপাশের আরও ১৩ জন ২০ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। তাতে ফলন হয়েছে বেশ। তবে যেভাবে বালি ফেলা শুরু হয়েছে আমরা আমাদের আদিপেশা ধরে রাখতে পারবো না।

 
Electronic Paper