ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪ | ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

কুল চাষে মামা-ভাগ্নের ভাগ্যবদলের হাতছানি

অনলাইন ডেস্ক
🕐 ৭:২৭ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩

কুল চাষে মামা-ভাগ্নের ভাগ্যবদলের হাতছানি

ইউটিউব দেখে কুল চাষ করে ভাগ্য বদলের হাতছানি নালিতাবাড়ির মামা ভাগ্নের সামনে। গল্পের শুরু ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ইউটিউবে মেহেরপুর জেলার তরুণ উদ্যোক্তা নাসির শাহ’র কুল বাগান দেখে এ চাষে প্রথম আগ্রহী হন জামাল উদ্দিন। তবে এই তরুণ উদ্যোক্তা বুঝে উঠতে পারছিলেন না কিভাবে শুরু করবেন কুল চাষ। কুল চাষের জন্য যেমন জমি প্রয়োজন সেটা ছিল না তার কাছে। মনে অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন জমির খোঁজে।

 

বিষয়টি নিয়ে জামাল উদ্দিন তার ভাগ্নে ইলিয়াস হোসেনের সাথে কথা বলেন। পরে তাদের আগ্রহ দেখে এ কাজে আগ্রহ প্রকাশ করেন জামাল উদ্দিনের বড় ভাই চরগোরকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নবী হোসেন।

সেই থেকে জামাল উদ্দিনের স্বপ্ন বাস্তব রূপ পেতে শুরু করে। কুল চাষের জন্য ভালো জমি পাওয়া যাচ্ছিলো না। একপর্যায়ে শেরপুর নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী হালুয়াঘাটের বেতকুড়ি গ্রামে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১৫ বিঘা জমি লিজে নিয়ে মামা-ভাগ্নে মিলে শুরু করেন কুল চাষ। পাশাপাশি এতে যুক্ত করেন উন্নত জাতের পেয়ারা ও লেবু।

রোপণের ৯ মাসের মধ্যেই প্রথমবারের মতো তাদের গাছে থোকা থোকা কুল ধরেছে। তাদের বাগানে রয়েছে বল সুন্দরী, কাশ্মীরি, ভারত সুন্দরী, আপেল কুল, বাউ কুল ও টক মিষ্টি কুল।
এছাড়াও তাদের এই বাগানে কুলের পাশাপাশি উন্নতজাতের মাল্টা, পেয়ারা ও সিডলেস লেবুর গাছ রয়েছে।

নতুন উদ্যোক্তাদের কথা মাথায় রেখে বাগানের পাশেই উন্নতমানের কলম চারা গাছ তৈরি করছেন। পাখিদের আক্রমণ থেকে কুল রক্ষার জন্য চারদিকে জাল দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে। মামা ও ভাগ্নে মিলে তাদের বাগানের নাম রেখেছেন থ্রি স্টার নার্সারি।

বর্তমানে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ তাদের নার্সারি দেখতে আসেন। উচ্চফলন দেখে অনেকেই তাদের এখান থেকে স্বল্প মূল্যে উন্নত জাতের চারা নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে নার্সারিতে তিনজন শ্রমিক কাজ করছেন। এতে করে তাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রকল্পের প্রধান উদ্যোক্তা জামাল উদ্দিন বলেন, পরিকল্পনা মাফিক চেষ্টায় ও পরিশ্রমে সফল হওয়া যায় ও ভাগ্যবদল হয় সেটার বড় প্রমাণ আমি নিজেই। ইউটিউবে কুল চাষের ভিডিও দেখেই আমি এ কাজে অনুপ্রাণিত হয়েছি।

সঠিক পরিচর্যার কারণে চারা রোপণের নয় মাসের মধ্যেই প্রত্যেকটি গাছ এখন কুলে পরিপূর্ণ। আমাদের সবকিছু মিলে প্রায় ১৭-১৮ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে। আমি মনে করি এ বছরই খরচ উঠে গিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা লাভ থাকবে।

উদ্যোক্তা ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমি জীবনে নানা ব্যবসা করেছি। কিন্তু লাভের মুখ দেখতে পারিনি। এক সময় আমার মনে হয়েছিল আমার দ্বারা কিছুই হবে না। পরে আমার মামা জামাল আমাকে ইউটিউবে কুল চাষ সম্পর্কে দেখালেন।

আমি দেখে অনুপ্রাণিত হলাম। বাসায় কথা বলার পর আমার পরিবার আমাকে উৎসাহ দিল। আমাদের এই কুল বাগানে যে ফলন দেখছি আমি আশা করছি আমাদের আর পিছু ফিরে চাইতে হবে না। আমরা প্রচুর লাভবান হবো।

উদ্যোক্তা নবী হোসেন বলেন, আমি একটি বেসরকারি স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছি। শিক্ষকতার ফাঁকে আমি এ কাজে নিয়োজিত। আমাদের চাষকৃত কুল ও বিভিন্ন জাতের পেয়ারা, লেবু, মাল্টা খুবই উন্নত ও নতুন জাতের।

এতে ফলন অনেক বেশি। আমরা কুল চাষের পাশাপাশি নার্সারির মাধ্যমে চারা তৈরি করছি। কেউ চারা ও পরামর্শ নিতে আসলে আমি তাদের পরামর্শ দেই। বিশেষ করে যারা বেকার রয়েছেন, আমি পরামর্শ দিবো এই কুল চাষে যেন বেকার ছেলেরা এগিয়ে আসে।

 
Electronic Paper