আমাদের সমাজে বিভিন্ন অঞ্চলে আলেমদেরকে হাদিয়া দিয়ে দোয়া চাওয়ার প্রচলন রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শরিয়তের বিধান জানতে চানতে চান অনেকে। আসলে এই প্রচলনটি সংশোধনযোগ্য। হাদিয়ার একটি আদব হলো- সব ধরনের বিনিময় ও উদ্দেশ্য থেকে মুক্ত হওয়া এবং তা হবে শুধু মহব্বত ও সম্মানের খাতিরে একমাত্র আল্লাহকে রাজি-খুশি করার জন্য।
তবে আমাদের জানামতে, কোনো আলেমকে দোয়া করবেন—এই বলে যে হাদিয়া দেওয়ার প্রচলন রয়েছে, সেটি সাধারণত দোয়ার বিনিময় হিসেবে দেওয়া হয় না। কোনো আলেমকে এ কথা বলতেও শোনা যায় না যে, টাকা দিলে দোয়া করব, অন্যথায় করব না বরং হক্কানি আলেমরা দোয়া প্রত্যাশীদের জন্য হাদিয়া ছাড়াই দোয়া করে থাকেন।
কিন্তু এক্ষেত্রে সত্যিই যতি দোয়ার বিনিময় হিসেবেই আদান-প্রদানের নিয়ত থাকে, তাহলে তা খুবই আপত্তিকর। কারণ, দোয়ার কোনো বিনিময় হয় না। দোয়া একটি খাঁটি, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বতন্ত্র ইবাদত। তা দুনিয়ার জন্য হোক বা আখেরাতের জন্য হোক। তাই দোয়ার বিনিময় হিসেবে কোনো কিছু নেওয়া যাবে না।
যদিও দুনিয়াবি বৈধ উদ্দেশ্যে খতম ইত্যাদি পড়ে পারিশ্রমিক নেওয়া জায়েজ হওয়ার কথা ফিকহের কিতাবে রয়েছে। কিন্তু সেটির সাথে দোয়ার বিনিময়কে তুলনা করা ঠিক নয়। দোয়া করে পারিশ্রমিক নেওয়া বৈধ হওয়ার কথা কেউ বলেননি। দোয়া মুসলমানরা একে অপরের জন্য বিনিময়হীনভাবেই করে থাকে এবং তাই করা উচিত।
(তিরমিজি: ৩৩৭২; বাজলুল মাজহুদ: ৭/৩২৪; মাজমুউ রাসাইলি ইবনি আবিদিন: ১/১৫৪; রদ্দুল মুহতার: ২/৫৯৫; ইমদাদুল ফতোয়া: ৩/৩৩৪)
কেকে/ আরআই