ফেসবুক, ইন্টারনেট, ইউটিউবের যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে গুলতি। একসময় গ্রামের শিশু-কিশোরদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল গুলতি। গুলতি দিয়ে পাখি শিকার, আম পাড়া ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কাজে ব্যবহার করতে দেখা যেত।
গুলতি (Gulti) হলো ছোট পাথর, মাটির বা মার্বেলের গুলি ছোড়ার প্রাচীন দেশি অস্ত্র। প্রাচীন কালে লাটিম-নাটাইয়ের পাশাপাশি গুলতির গুরুত্বও কম ছিল না। একসময় গুলতি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত হতো। এই যন্ত্র প্রথম আবিষ্কার করে গ্রিকরা। পরে বিভিন্ন দেশে যুদ্ধক্ষেত্রে দুর্গের মাঝে বড় বড় পাথর ও আগুনের গোলা ছুড়ে মারার জন্য এটি ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে এর ব্যবহার নেই বললেই চলে।
গুলতি তৈরি করা হয় Y আকৃতির কাঠের ফ্রেম দিয়ে। Y-এর দুই মাথায় ইলাস্টিক বেধে মাঝখানে একটি গোলাকার শক্ত বস্তু রেখে পিছনের দিকে টান দিয়ে ছেড়ে দিলে বস্তুটি দূরে নিক্ষিপ্ত হয়।
জানা যায়, গ্রাম অঞ্চলের মানুষ অতীতে মাটি থেকে কাদা তৈরি করে মার্বেলের মতো গোল গোল করে রোদে শুকিয়ে উনুনে পুড়িয়ে গুলতির গুলি বানাত। সময়ের পরিবর্তনে এখন কাচের মার্বেল ব্যবহার করা হয়।
একসময় গ্রামের শিশু-কিশোরদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিল গুলতি। কিন্তু এখন এটি প্রায় দেখা যায় না। তাই শিশু-কিশোররা গুলতির অভাবে খেলনা পিস্তল-বন্দুক বেছে নিয়েছে এবং এসব খেলনা নিয়েই খেলতে বেশি পছন্দ করে। অনেক শিশুই এখন গুলতি চেনেই না।
ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ময়না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কালিপদ চক্রবর্তী বলেন, “একসময় আমাদের দেশের গ্রামগঞ্জের শিশু-কিশোরের হাতে হাতে ছিল গুলতি। কিন্তু সময়ের বিবর্তনে শিশু-কিশোররা গুলতির অভাবে বেছে নিয়েছে খেলনা পিস্তল-বন্দুক। এসব খেলনা নিয়েই তারা খেলতে বেশি পছন্দ করে। এখনকার অনেক শিশুই গুলতি চেনেই না।”
কেকে/ আরআই