নেফ্রোটিকের সঙ্গে (কিডনি রোগে) লড়াই করে মারা গেছে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার হুমায়রা আক্তার মৌমিতা।
রোববার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৮টা ১০ মিনিটের দিকে রাজধানীর কিউর স্পেশালাইজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে মৌমিতা।
মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন মৌমিতার বাবা আফজাল হোসেন হিমেল। মৌমিতার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মৌমিতার বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামে। সে ওই গ্রামের আফজাল হোসেন হিমেলের মেয়ে।
জানা গেছে, রোববার বাদ মাগরিব হারুয়া হারুন-নগরী জামে মসজিদে মৌমিতার জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
মৌমিতার পরিবার জানায়, প্রথমে মৌমিতার শরীরে পানি আসে। পরে ডাক্তারি চিকিৎসায় পানি কিছুটা কমে। এর কিছু দিন পর শরীরে আবার পানি বেড়ে যায়। তখন চিকিৎসকরা জানান, কিডনির সমস্যা। মৌমিতার চিকিৎসার জন্য তার বাবা নিজের সর্বস্ব শেষ করে মানুষের কাছ থেকে সহযোগীতা নিয়েও মেয়ের চিকিৎসা করেছেন। দীর্ঘদিন বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করেও মেয়েকে বাঁচাতে পারেনি বাবা আফজাল হোসেন হিমেল। বাবার দুঃখ আরও গভীরে দাগ কেটেছে শেষ বিদায়ে মেয়ের জানাজা ও দাফনে অংশ নিতে পারবে না বলে।
রোববার দুপুরে মৌমিতার বাবা আফজাল হোসেন হিমেল অপর এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানান, বাদ মাগরিব হারুয়া হারুন-নগরী জামে মসজিদে মৌমিতার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। আমি জানাজায় অংশগ্রহণ করতে পারব না। আমি আপনাদের (এলাকাবাসীর) হাতে ও আল্লাহর হাতে আমার মেয়েকে দিয়ে দিলাম।
জানাযায় অংশগ্রহণ গ্রহণ করতে না পারার কারণ সম্পর্কে জানা গেছে, রাষ্ট্রদোহীতা ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ঢাকার রমনা থানায় মৌমিতার বাবা নামে একটি মামলা হয়েছে। তিনি সেই মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি।
নিহত ফুটফুটে শিশু মৌমিতা স্থানীয় একটি মাদ্রাসার নূরানি বিভাগের ছাত্রী ছিল। যে বয়সে আধো আধো কণ্ঠে বাবার কাছে আবদার করার কথা ছিল, যে বয়সে বই-খাতা নিয়ে সহপাঠীদের সাথে স্কুলে যাওয়ার কথা, সেই বয়সে কিডনি রোগে নিভে গেল শিশুটির জীবনপ্রদীপ।
কেকে/ এমএ