জয়পুরহাটের কালাইয়ে কবিরাজি চিকিৎসার কথা বলে এক তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে এক মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষকের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন সময়ের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে শনিবার দুপুরে ওই তরুণীর ঘরে প্রবেশ করলে এলাকার লোকজন তাকে আটক করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ওই তরুণীর পরিবারের সাথে দেড় লাখ টাকায় রফাদফা করে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের এলতা গ্রামে ঘটে।
স্থানীয় ও তরুণীর পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার বটতলী মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক মাওলানা এমরান হোসেন চাকরীর পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে কালাই উপজেলার এলাতা পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদে ঈমামের দায়িত্ব পালণ করে আসছেন। তিনি কবিরাজি চিকিৎসাও করেন। সে কারণে মেয়েলি সমস্যার কারণে এলতা গ্রামের ওই তরুণী ইমাম এমরান হোসেনের স্মরনাপূর্ণ হয়। এরইমধ্যে ঈমাম এমরান হোসেন ওই তরুণীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিয়ের কথা বলে একাধিকবার শাররিক মেলামেশাও হয় তাদের মধ্যে। এসব ঘটনা ঈমাম এমরান হোসেন তার মোবাইলে ভিডিও ধারন করে রাখেন। কয়েকদিন আগে ওই তরুণী বিয়ের কথা বলায় তাদের মধ্যে দ্বন্দ বাঁধে। একপর্যায়ের তাদের মধ্যে কথাবার্তা বন্ধ হয়।
শুক্রবার বিকেলে ওই তরুণী উপজেলার মোলামগাড়ীহাটে তার নানার সাথে বেড়াতে গেলে সেখানে দেখা হয় ঈমাম এমরান হোসেনের সাথে। সেখানে তিনি জোরপূর্বক ওই তরুণীর হাত ধরে সিএনজিতে ওঠাতে চাইলে জনতা বাঁধা দেয়। পরে তারা যে যার মত বাড়িতে যায়।
এদিকে রাতে ঈমাম এমরান হোসেন আবারো ওই তরুণীকে মোবাইল ফোনে বলে, তার কথাতে রাজি না হলে পূর্বের ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়া হবে। তখন বাধ্য হয়ে ওই তরুণী তার পরিবারের সদস্যদের নিকট এসব বিষয় অবগত করেন।
শনিবার দুপুরে ঈমাম এমরান হোসেন গত রাতের কথামতে যোহরের নামাজের পর ওই তরুণীর বাড়িতে গিয়ে ঘরের ভিতরে অবস্থান করেন। তখন পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনদের ডেকে নিয়ে দুইজনকে আটকে রাখেন। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় ঈমাম এমরান হোসেন দেড় লাখ টাকা দিয়ে এঘটনা রফাদফা করে সেখান থেকে উদ্ধার হন।
তরুণীর মামা রুবেল হোসেন বলেন, আমার ভাগ্নীর বাবার বাড়ী বগুড়া শহরে। ওর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সে এখানেই থাকে। অনেকদিন ধরে সে অসুস্থ্য। তাই হুজুরের নিকট চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। হুজুর কবিরাজি চিকিৎসা দেন। এরমধ্যে যে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে তা আসলে আমরা কেউ বুঝতেই পারিনি। আজকে হুজুর বাড়িতে আসলে গ্রামের লোকজন এসে তাদেরকে আটকে রাখে। মামলা করতে চাইলে গ্রামের সবাই মিলে দেড় লাখ টাকা দিয়ে আপোষ করে দিয়েছে। টাকা নগদ দিয়েছে।
বটতলী মাদ্রাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক মাওলানা এমরান হোসেন বলেন, আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম এটা সত্য, তবে কোনো খারাপ কাজ করিনি। শুক্রবার রাস্তায় হাত ধরে টানাটানি করেছেন কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
বিএনপি নেতা মুকুল হোসেন বলেন, ওই তরুণী আমার নিকট আত্মীয়। ঘটনা জানার পর সেখানে গিয়ে দেখি দেড় লাখ টাকায় তারা মিমাংশা করেছে।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন,‘এবিষয়ে শুনেছি, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই তারা পারিবারিকভাবে বিষয়টি সমাধান করেছে। আর কেউ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কেকে/ এমএস