রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা (পোষ্যকোটা) পুনর্বহাল ও শিক্ষক লাঞ্চনার বিচারের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একাংশ ৷ এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সীমিত পরিসরে চলছে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে সকাল ১০ টা থেকে সকল কার্যক্রম স্থগিত রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন বিএনপিপন্থী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন-১ এ উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, জনসংযোগ দপ্তরসহ অধিকাংশ অফিস খোলা রয়েছে। দাপ্তরিক কাজকর্মও করছেন অনেকে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জামায়াতে ইসলামীপন্থী কর্মকর্তারা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে দাপ্তরিক কাজকর্ম করছেন। তবে, জামায়াতপন্থী শিক্ষকরা রাকসু নির্বাচনের কাজকর্মে সহযোগিতা করলেও একাডেমিক কার্যক্রমে এখনো যোগ দেননি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তারা অবস্থান কর্মসূচি না করলেও বিএনপিপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে অফিসিয়াল কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছেন।
কর্মবিরতি বিষয়ে অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, ‘কিছু নামমাত্র ছাত্র এর আগেও আমাদের উপর হামলা করেছে। এই প্রশাসনের কাছে আমরা শাস্তির দাবি জানালেও কোনো বিচার নিশ্চিত হয়নি। আমরা আর তদন্ত কমিটিতে আশ্বস্ত হতে চাইনা। যতদিন না পর্যন্ত এই প্রশাসন আমাদের বসে আমাদের দাবি মেনে না নিবে এবং শিক্ষক লাঞ্চনার শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস না দিবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে ৷’
প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিশ্চিত না হলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে সহযোগিতা করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি এখনও বলছি আমাদের আন্দোলন চলুক আর না চলুক রাকসু নির্বাচনে আমাদের সহযোগিতা থাকবে।’
জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজকের এই কর্মসূচি। আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
আওয়ামী লীগপন্থী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তবে, এখনো নতুন কমিটি গঠিত হয়নি। সংগঠনের পক্ষ থেকে আমি এখন কিছু বলতে পারবো না। আর আমি এখন একাডেমিক বিষয় ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে মন্তব্যও করতে চাচ্ছি না।
আপনি বিভাগে ক্লাস নিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই তিনদিনে আমার ক্লাস ছিল না। এজন্য ক্লাস নেওয়া বা না নেওয়া বিষয়ে আমার কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দিন বলেন, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যেই অফিসার সমিতি নেতাদের সঙ্গে মিটিং করে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানাব।
এর আগে গত রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) একই দাবিতে তারা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং গতকাল সোমবার কমপ্লিট শাটডাউন পালন করেন।
কেকে/এআর