রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। সাড়ে চার ঘণ্টা চলা এ কর্মসূচি শেষ হয় রাত ১১টায়।
এদিকে শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ থেকে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি থাকলেও পরে তা স্থগিত করা হয়।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আবু ইয়াকুব জানান, সব রাজনৈতিক স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে আজকের কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, শুক্রবার জুমার নামাজের পর অরাজনৈতিক ও রাজনৈতিক সব স্টেকহোল্ডারদের একত্রিত করে নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। রাত পৌনে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। এ সময় ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ রাকসু নির্বাচনের বিভিন্ন প্রার্থীও এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যার মধ্যে ছিল— ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আবু সাঈদ, মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’। এদিকে রাত ৮টার পর শুরু হওয়া বৃষ্টিতে ভিজেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যান।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে ভর্তি উপ-কমিটির এক সভায় পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০টি শর্ত সাপেক্ষে পোষ্য কোটা চালু করা হবে। রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ শতাংশও পোষ্য কোটা রাখা হবে না এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকেই তা কার্যকর হবে।
কোটা বাতিলের পর থেকেই শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তা পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন। সর্বশেষ গত বুধবার তারা তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন এবং ঘোষণা করেন, দাবি না মানলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নেয়, যা শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাখ্যান করে নতুন আন্দোলনের ডাক দেন।
কেকে/ আরআই