কুষ্টিয়ার পৌর গোরস্তানে বাবা-মায়ের কবরে লোকসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ১০ মিনিট তার মরদেহ গোরস্তান চত্বরে রাখা হয়।
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদা পারভীনের লাশবাহী গাড়ি ঢাকা থেকে কুষ্টিয়া পৌর গোরস্তানে পৌছায়। সেখানে নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফিন, লালন গবেষক লালিম হক, জেলা প্রশাসন, জেলা শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
পৌর গোরস্তানের খাদেম নূর ইসলাম বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের আত্মীয় আবদুর রাজ্জাক কবর খননের জন্য বলেছিলেন। ফরিদা পারভীনের শেষ ইচ্ছেনুযায়ী মা রৌফা বেগম ও বাবা দেলোয়ার হোসেনের কবরে দাফন করা হয়েছে।’
কুষ্টিয়া পৌর গোরস্তানের গোরখদক (কবর খননকারী) মধু মিয়া বলেন, ‘সকাল থেকে কবরস্থানে পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হয়। নির্ধারিত জায়গায় কবর খনন করা হয়েছে।’
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফরিদা পারভীন শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। মুত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তার মৃত্যুতে কুষ্টিয়ার বাড়িতে ভিড় জমে স্বজন, বন্ধু ও ভক্তদের। চারদিকে নেমেছে শোকের ছায়া।
লালিম হক বলেন, ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’ ও ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’সহ বহু জনপ্রিয় লালনগীতি ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে জীবন্ত হয়ে উঠেছে। তার মৃত্যুতে যে ক্ষতি হয়েছে, তা অপূরণীয়। বর্তমান প্রজন্মকে তার সম্পর্কে জানাতে হবে।’
শ্রদ্ধা জানাতে আসা ফরহাদ মজহার বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে এক শূন্যতা তৈরি হয়েছে। লালনকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছিলেন তিনি। একসময় লালন সংগীত ছিল লোকসংগীত। লোকসংগীত থেকে লালন সংগীত হিসেবে বিশ্ব দরবারে ফরিদা পারভীন প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।’
১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়ায় জন্ম নেওয়া ফরিদা পারভীন বাবার চাকরির সুবাদে ছোটবেলা থেকে কুষ্টিয়ায় বড় হন। মাত্র ১৪ বছর বয়সে পেশাদার সংগীতজীবন শুরু করেন। ৫৫ বছরের সংগীতজীবনে লালনসংগীতে তিনি গড়ে তুলেছিলেন নিজস্ব এক ঘরানা। শ্রোতারা ভালোবেসে তাকে ‘লালনকন্যা’ উপাধি দিয়েছিলেন।
কেকে/ এমএ