# সড়ক নির্মাণে বাধা দেয়নি বন বিভাগ
# হুমকিতে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্য
# শালবন রক্ষায় ঢিলেঢালা ভাব
গাজীপুরে ২০ ধারায় সংরক্ষিত শালবন ধ্বংস করে এক কিলোমিটারের বেশী পিচ ঢালাই সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। জেলার এলজিইডির বন বিধ্বংসী এই কাজে বাধা দেয়নি স্থানীয় ফরেস্ট রেঞ্জ অফিস।
অভিযোগ উঠেছে, একটি রাজনৈতিক দলের কয়েকজন নেতার মদদে সম্প্রতি বন বিভাগ সড়কটি নির্মাণে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ঢাকা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের অধীন গাজীপুর বারুইপাড়া বিটে সড়কটি নির্মিত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বারুইপাড়া বিটের অধীন রাজেন্দ্রপুর ইকো রিসোর্ট থেকে দিবানিশি মোড় পর্যন্ত নির্মাণাধীন সড়কটির দৈর্ঘ্য এক কিলোমিটারের বেশী। শালবনের ঝোপ জঙ্গল পরিস্কারের পাশাপাশি সড়কটি নির্মাণ করতে শাল কপিচ কর্তন করা হয়েছে। কর্তনকৃত শাল কপিচগুলো সড়কের পাশে ফেলে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় অধিবাসী আল আমিন জানান, ২০ ধারায় সংরক্ষিত বন ধ্বংস করে সড়ক নির্মিত হলেও বন বিভাগ নীরব ভূমিকায় রয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে সড়ক নির্মাণের কাজ চললেও বন বিভাগকে বাধা দিতে দেখা যাচ্ছে না। অথচ কয়েক যুগ আগের পুরাতন বাড়ির একটি ঢেউটিন বদল করতে গেলে বিট অফিসে টাকা দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বনকর্মীরা জানান, তদবির করে ভাওয়াল রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই রেঞ্জটির বিট কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের সঙ্গে তার সমন্বয়হীনতা রয়েছে। এতে বন জবরদখলকারীদের সুযোগ তৈরি হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আদেশ পালনে তার অনিহার শেষ নেই। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেউ বন দখলের তথ্য দিলে সেই তথ্যদাতার বিরুদ্ধে প্রভাবশালীদের তিনি লেলিয়ে দেন। তিনি দায়সারা চাকরি করে যাচ্ছেন। বনে নতুন সড়কটি নির্মাণ কাজে রেঞ্জ কর্মকর্তার ব্যক্তিগত স্বার্থ থাকতে পারে বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন কর্মচারিরা জানান।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানায়, ভাওয়াল রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম রেঞ্জটির দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে সড়কটি নির্মাণ চেষ্টা হয়েছিল। তবে তৎকালীন সহকারী বন সংরক্ষক মোজাম্মেল হোসেন (বর্তমানে অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে) গভীর রাত পর্যন্ত নিজে উপস্থিত থেকে ওই বনভূমি পাহারা দিতেন। তিনি চলে যাওয়ার পর নতুন উদ্যমে সড়কটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
সবুজ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান বাপ্পি সরদার বলেন, জনগুরুত্বহীন সড়ক নির্মাণে এলজিইডির উদ্যোগ দুদকের তদন্ত করা প্রয়োজন। বনে সড়ক নির্মাণের সুযোগ না থাকলেও সড়কটি কিভাবে নির্মিত হচ্ছে এটি তদন্তের দাবি রাখে। স্থানীয় বন বিভাগ সড়কটি নির্মাণে কেন বাধা দিচ্ছে না এটিও তদন্তের দাবি রাখে।
এ ব্যাপারে গাজীপুুর এলজিইডির উপসহকারী প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন শেখ জানান, সড়কটি সংরক্ষিত বনের ভেতর দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এটা ঠিক। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক অবগত বলেও তিনি দাবি করেন।
প্রকাশ্য দিবালোকে সড়কটির নির্মাণ কাজ চললেও এ ব্যাপারে ভাওয়াল রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান, সড়কটি নির্মাণের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। জেনে ব্যবস্থা নিবেন বলেও তিনি জানান।
কেকে/এজে