ডাকসু নির্বাচনে ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতির প্রার্থীতার বিরুদ্ধে রিট আবেদনকারী নারী শিক্ষার্থীকে শিবির নেতা কর্তৃক প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেত্রীদের হেনস্থা এবং শিবিরের নেতাকর্মীদের দ্বারা সারাদেশে নারী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে অব্যাহত সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ছাত্রদল।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষদ ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে দলের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিলে নেতাকর্মীরা ‘জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো’, ‘রাজাকার আর স্বৈরাচার, মিলেমিশে একাকার’, ‘লুঙ্গির নীচে রাজাকার, লুঙ্গির মালিক স্বৈরাচার’, ‘শিক্ষা সন্ত্রাস, একসাথে চলে না’, ‘ছাত্রদলের অঙ্গীকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস’, ‘জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার পারভেজ, যুগ্ম আহবায়ক আবু দাউদ, আহসান হাবীব, আনারুল ইসলাম, রোকনউদ্দিন, সদস্য সাব্বির হোসেন, রাফিজ আহমেদ, নুরউদ্দিন, কর্মী রোকন, উল্লাস, স্বাক্ষর, তৌহিদ, আলামিন, মোহাম্মদ আলী, রেজাউল রাকিব সহ শতাধিক নেতাকর্মী।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর তারেক রহমানের নির্দেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের সময় দেখেছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের কোন কমিটি নাই। হলের প্রতিটি রুমে ছাত্রলীগের স্টিকার লাগানো ছিলো। ফ্যাসিস্ট হাসিনা পালানোর পর কি এমন হলো যে আপনারা সবাই একদিনে ছাত্রশিবির হয়ে গেলেন। আপনারা ১৬ বছর ফ্যাসিবাদের সাথে ছিলেন। আপনারা ধর্ষন করেছেন, হামলা মামলা দিয়ে মুক্তিকামী জনতাকে নির্যাতন করেছেন, আজকে আপনারা ছাত্রশিবির সেজেছেন। একাত্তরের সময়েও আপনারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন। আপনারা রাজাকার ছিলেন, আপনারা বাংলার মা-বোনকে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন। ইন্টেরিমকে বলতে চাই, এদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। এছাড়া সাজিদ হত্যার সন্দেহভাজনদের গ্রেফতারের অনুমতি দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আহ্বান জানান তিনি।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছেলে যে ছাত্রশিবির করে, নাম আলী হাসান। আমাদের একটি বোন ফাহমিদা আলম ছাত্রশিবিরের ডাকসু নির্বাচনের জি এস ক্যান্ডিডেটের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার কারণে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন। সেই রিটের প্রতিবাদে আলী হাসান ফেসবুকে পোস্ট করেছে ফাহমিদাকে গণধর্ষণ করতে হবে।
তিনি ছাত্রশিবিরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা আপনাদের ছেলেদের থামান। এই ধর্ষণের পক্ষে কেউ অবস্থান নিবেন না। ৫ আগষ্টের পর আমরা পরিবর্তিত বাংলাদেশ চাই। যেখানে নিরাপদ ক্যাম্পাস থাকবে, যেখানে আমাদের ভাই বোনেরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবে। ইন্টেরিমের কাছে আমি দাবি জানাচ্ছি, এদের গ্রেফতার করতে হবে। ছাত্রশিবিরকে পরিবর্তন করতে হবে। ধর্ষণকে লালন করা যাবেনা। সবাইকে আমি আহ্বান জানাচ্ছি, এই বাংলাদেশে আমরা সবাই যেন সুন্দর সুশৃংখল রাজনীতি করি। আমরা দিল্লির কিংবা পিন্ডির দাসত্ব করবো না, সেই চিন্তা যেনো আমাদের মাথায় থাকে। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের নিকট সাজিদ হত্যার বিচারের দাবি তোলেন।
কেকে/ আরআই