রোববার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫,
২৩ ভাদ্র ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

রোববার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শিরোনাম: বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন      মেসির জোড়া গোলে আর্জেন্টিনার বড় জয়      আ.লীগের ভয়ংকর পরিকল্পনা      বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে নারীবিদ্বেষ      পুলিশের ওপর হামলা করে হাতকড়াসহ আসামি ছিনতাই      ৩০০ আসনের সীমানার চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ      ডাকসু নির্বাচন নিয়ে কোনো রিট শুনবে না হাইকোর্ট      
প্রিয় ক্যাম্পাস
স্বতন্ত্র প্রার্থী বনাম রাজনৈতিক প্রার্থী
জাকসু নির্বাচনে শিক্ষার্থীদের ভাবনায় এগিয়ে যারা
শাহরিয়ার আলম, জাবি
প্রকাশ: শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫, ১১:১২ পিএম
ছবি : খোলা কাগজ

ছবি : খোলা কাগজ

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচন ঘিরে শিক্ষার্থীদের মাঝে ইতোমধ্যেই উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে শিক্ষার্থীদের আলোচনায় ভোটযুদ্ধে মূলত দুটি পক্ষের প্রতিযোগিতার বিষয়টিই বেশি  ঘুরে বেড়াচ্ছে। দুটি পক্ষের একদিকে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের প্রার্থী ও অন্যদিকে স্বাধীন স্বতন্ত্র প্রার্থী। কে এগিয়ে, কার কাছে শিক্ষার্থীরা আস্থা রাখবে সেটিই এখন প্রধান প্রশ্ন।

সক্রিয় রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর  মধ্যে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাগছাস, ছাত্র ইউনিয়ন সহ রয়েছে অন্যান্য বাম ছাত্র সংগঠন। ইতোমধ্যে ছাত্রশিবির ও বাগছাস তাদের নির্বাচনী প্যানেল ঘোষণা করেছে। ছাত্রদলও তাদের প্যানেক ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে।অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠন থেকে উঠে আসা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মিলে একটি জোট গঠন করবে বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে প্রচার প্রচারণা শুরু না হলেও প্রার্থীদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশ শোরগোল শোনা যাচ্ছে।

স্বাধীন প্রার্থীদের পক্ষে অন্যতম বড় শক্তি হলো শিক্ষার্থীদের সরাসরি আস্থা ও ব্যক্তিগত গ্রহণযোগ্যতা। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা দলীয় রাজনীতির বাইরে গিয়ে প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব, সততা, কিংবা ব্যক্তিগত সম্পর্কই ভোটের মাঠে প্রধান শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়াও ৫ আগস্টের পর থেকে লেজুরবৃত্তি ছাত্ররাজনীতির প্রতি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ এবং জুলাই আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সরাসরি সম্মুখ সারিতে অংশগ্রহণ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের এগিয়ে রাখছে।

অন্যদিকে, ছাত্র সংগঠনের প্রার্থীদের পেছনে রয়েছে দীর্ঘ সাংগঠনিক নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা। ছাত্র সংগঠনগুলো সাধারণত দীর্ঘ সময় ধরে ক্যাম্পাসে সক্রিয় থাকায় তাদের ভোট ব্যাংক তুলনামূলকভাবে দৃঢ়।এছাড়াও সংগঠনের ব্যানারে দাঁড়ালে প্রার্থীর সাংগঠনিক সহায়তা এবং অনলাইন ও অফলাইন প্রচারণার ক্ষেত্রে জনবল ইত্যাদি বিষয়ে এগিয়ে থাকেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের ৫১ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী জাইবা জাফরিন বলেন, কে এগিয়ে আছে তা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন, কারণ সাম্প্রতিক সময়ে ‘অরাজনৈতিক শিক্ষাঙ্গণ’ একটি জনপ্রিয় দাবি হয়ে উঠেছে। তারপরও আমার মনে হয় রাজনৈতিক প্রার্থীরাই কিছুটা এগিয়ে।দায়িত্ব পালনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে রাজনৈতিক প্রার্থীরাই। ক্যাম্পাসের অধিকাংশ অধিকার আন্দোলনে সামনে ছিলেন রাজনৈতিক শিক্ষার্থীরা। আমি ব্যক্তিগতভাবে আন্দোলনে খুব বেশি অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীকে সামনে দেখিনি। রাজনৈতিক প্রার্থীরা প্রশাসনকে সরাসরি ফেইস করার অভিজ্ঞতা রাখে, পলিটিক্যাল ভিশন নিয়ে কাজ করে। শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় কনস্ট্যান্টলি সক্রিয় থেকেছেন তারাই। তবে এটাও ঠিক, তাদের অনেক সময় রাজনীতি-কেন্দ্রিক হয়ে যাওয়ার একটি আশঙ্কা রয়ে যায়।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ফারুক মিয়া বলেন, আমার মতে, স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং রাজনৈতিক প্রার্থী উভয়েই এগিয়ে থাকতে পারে, উভয় প্রার্থীই শিক্ষার্থীর কল্যাণে কাজ করতে পারে যদি তাদের ভেতর কাজ করার সদিচ্ছা থাকে, শিক্ষার্থীদের ওউন করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী এগিয়ে থাকতে পারে। কারণ ইতোপুর্বে আমরা দেখেছি লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি ও ভাই পলিটিক্স কীভাবে ক্যাম্পাস পলিটিক্স কে কলুষিত করেছে, তাই স্বতন্ত্র প্রার্থীকেই এগিয়ে রাখা যায় কারণ তিনি দলীয় প্রভাবের বাইরে গিয়ে কাজ করতে পারবেন,কোনো ভাই পলিটিক্সের সম্মুখীন তাকে হতে হবেনা। তিনি লেজুড়বৃত্তিক বলয়ের বাইরে গিয়ে তার বিচক্ষণতা,প্রজ্ঞা,সততা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে শিক্ষার্থীবান্ধব কাজ করে শিক্ষার্থীদের মন জয় করতে পারেন। স্বতন্ত্র প্রর্থীর চেয়ে রাজনৈতিক প্রার্থীকেও এগিয়ে রাখা যেতে পারে যদি সেই রাজনৈতিক প্রার্থী দলীয় প্রভাবের বাইরে গিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন, লেজুড়বৃত্তিক বলয়ের বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কল্যাণকে প্রায়োরিটি দেন।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী কামরুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি মনে করি জাকসুর ক্ষেত্রে এগিয়ে রাখতে গেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী বা রাজনৈতিক প্রার্থী হিসেবে বিচার করলে ভুল হবে। কারণ জাকসুর নির্বাচনে প্রার্থীর জয় পরাজয় নিশ্চিত করবে ৫০-৬০%  অরাজনৈতিক বা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোট। হ্যাঁ এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের প্রার্থীরা তাদের দলের নেতা-কর্মীদের ভোটগুলো নিশ্চিত পাবে, এটা তাদের একটা এডভান্টেজ। কিন্তু যাদের ভোটের মাধ্যমে জয় পরাজয় নিশ্চিত হবে, তারা স্বতন্ত্র বা রাজনৈতিক ব্যক্তি বলে ভোট দিবে না। তারা ভোট দিবে ব্যক্তি কে। এজন্য আমি প্রার্থীর রাজনৈতিক বা স্বতন্ত্র অবস্থান নয় বরং ব্যক্তিগত প্রোফাইলকে এগিয়ে রাখবো।

দায়িত্বের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বেশি অগ্রসর ভূমিকা রাখতে পারবে আসলে যোগ্য ব্যক্তি। অর্থাৎ যে ব্যক্তি যে পদের জন্য যোগ্য ও অভিজ্ঞ তিনিই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে তার রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থাকুক বা না থাকুক, ব্যক্তির যোগ্যতা না থাকলে তিনি আসলে শিক্ষার্থীদের জন্য তেমন কাজ করতে পারবেন না। তবে হ্যাঁ রাজনৈতিক দলের যোগ্য ব্যক্তি তার দায়িত্ব পালনে তার রাজনৈতিক দলের সাপোর্ট পাবে, যেটি তার কাজকে সহজ করে দিবে। এজন্য ভোটারদের উচিত প্রার্থীদের শুধু রাজনৈতিক অবস্থান বা স্বতন্ত্র অবস্থান দেখে ভোট  না দেয়া। ভোট দিবেন ব্যক্তির সততা, যোগ্যতা এবং নৈতিকতা দেখে।যোগ্যরা উপযুক্ত স্থানে যাক।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বা যে কোনো শিক্ষাপরিষদের নির্বাচনকে  প্রায়শই আদর্শ বনাম বাস্তবতার এক পরীক্ষাক্ষেত্র হিসেবে দেখি।রাজনৈতিক ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে রাজনৈতিক প্রার্থীই বেশি এগিয়ে থাকবে বলে আমি মনে করি।কারণ তারা দ্বৈত দায়বদ্ধতার কাঠামোর মধ্যে কাজ করেন।শিক্ষার্থীদের প্রতি জবাবদিহি, ও আদর্শিক ধারা বাস্তবায়ন সব মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সচেতনতায় আমি রাজনৈতিক প্রার্থীকেই এগিয়ে রাগবো।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  স্বতন্ত্র প্রার্থী   রাজনৈতিক প্রার্থী   জাকসু নির্বাচন   শিক্ষার্থীদের ভাবনা  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

চুরি করতে গিয়ে ধরা, নিজেকে বাঁচাতে মামাকে ছুরিকাঘাত
দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ কিছু আমল ও ফজিলত
বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন
বোয়ালমারীতে পাগলা ঘোড়ার কামড়ে আহত ২০
টাঙ্গাইলে কাদের সিদ্দিকীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর

সর্বাধিক পঠিত

রূপগঞ্জে বিএনপির সদস্য নবায়ন ও সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন
হাটহাজারী মাদ্রাসা নিয়ে কটুক্তিকারী যুবক আটক
তেজগাঁওয়ে ঝটিকা মিছিলের আয়োজক সুইটি গ্রেফতার
বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় আসবে
লালপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৪

প্রিয় ক্যাম্পাস- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close