ডিইপিজেডের সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান সুইফট লজিস্টিক সার্ভিস লিমিটেডের এক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশিক হাসানকে(৩০) দিনে দুপুরে ডিইপিজেডের ভেতর থেকে তুলে নিয়ে যায় ২৫-৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ডিইপিজেড এলাকায় এ ঘটনার ঘটে। ডিইপিজেডের নিরাপত্তার মধ্যেও এ ঘটনায় সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী মোহাম্মদ আশিক হাসান আশুলিয়া থানায় মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন মিন্টুকে প্রধান আসামি করে মোট ৩২ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-০২ তারিখ- ০২-০৮-২৫ ইং)। দেলোয়ার হোসেন মিন্টু আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকার মোহাম্মদ পিয়ার আলীর ছেলে।
ভুক্তভোগী মো. আশিক হাসান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দেলোয়ার হোসেন মিন্টুর নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আমাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছিল। কিন্তু আমরা কোনভাবেই চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন রকমের হুমকি দিয়ে আসছিল।
তিনি আরও জানান, এরই প্রেক্ষিতে গত ৩১ জুলাই দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের সময় মেহেদী, রাশেদুল ইসলাম টুটুল, আজিজ, ফরহাদ, গলাকাটা আরিফ, নাঈম জাকিউল, জিমসহ ২৫-৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ আমার ওপর হামলা চালায় এবং আমাকে জোরপূর্বক ডিইপিজেড’র ভেতর থেকে তুলে নিয়ে ভাদাইল এলাকায় দেলোয়ার হোসেন মিন্টুর অফিসে নিয়ে যায়।
“সেখানে উপস্থিত মিন্টুসহ তার সহযোগীরা আমাকে কয়েক ঘন্টা আটকে রেখে লোহার রড ও জিআইপাইপ দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকে। এ সময় আমার কাছে থাকা প্রতিষ্ঠানের ট্যাক্সের ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়।”
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে আশুলিয়া থানা একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। দোষী যেই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যে এজাহারভুক্ত আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু করে দিয়েছে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীরা সশস্ত্র না থাকায় শুধু লাঠি দিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। আমরা দ্রুত উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিরাপত্তা বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
এ ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. মোমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা ইপিজেডসহ সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের শিল্প কারখানা নিরাপদ, কর্মপরিবেশ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখার জন্য কাজ করছি। গত ৩১ জুলাই ঢাকা ইপিজেডে জনৈক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি তাৎক্ষণিক কোন সংবাদ ভিকটিম অথবা ইপিজেড কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে আমরা জানতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি জানার পর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ ঘটনার পরিদর্শন করেছেন। গতকাল (শুক্রবার) সাপ্তাহিক ছুটি থাকার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে আগামীকাল ইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও আশুলিয়া থানা পুলিশ নিয়ে গুরুত্ব সহকারে আমরা আলোচনা করে ইপিজেডের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরদার করার প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। এই ঘটনার পর ইপিজেডের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য পোষাকধারী পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
কেকে/এজে