সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে বলে ঘোষণা করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) ফ্রান্স সময় রাত সাড়ে ৯টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক (এক্স) পেজে দেওয়া এক বিবৃতিতে এই ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন তিনি। তিনি জানান, সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবেন।
পোস্টে ম্যাক্রোঁ লিখেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতির প্রতি বিশ্বস্ত থেকে, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।
পোস্টে ম্যাক্রোঁ লিখেছেন, আজকের জরুরি বিষয় হল গাজার যুদ্ধ বন্ধ করা এবং বেসামরিক জনগণকে বাঁচানো। মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তির প্রতি তার ঐতিহাসিক প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে ফ্রান্স ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে।
শান্তি সম্ভব, ম্যাক্রোঁ জোর দিয়ে বলেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, সমস্ত জিম্মিদের মুক্তি এবং বৃহৎ পরিসরে মানবিক সহায়তার আহ্বান জানাচ্ছি।
ম্যাক্রোঁ বলেন, লক্ষ্য হতে হবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়ে তোলা, এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করা এবং মধ্যপ্রাচ্যের সবার নিরাপত্তায় অবদান রাখার জন্য এর নিরস্ত্রীকরণ গ্রহণ এবং ইসরায়েলকে সম্পূর্ণরূপে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে এটিকে সক্ষম করা। ফরাসি জনগণ শান্তি চায় এবং এটি অর্জনের জন্য ইসরায়েলি, ফিলিস্তিনি এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের মধ্যে একটি সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
তিনি আরো বলেন, ফরাসিরা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি চায়। আমাদের, ইসরাইলি, ফিলিস্তিনি, ইউরোপীয় এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারদের একসঙ্গে প্রমাণ করতে হবে— শান্তি সম্ভব। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পরই তিনি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
তিনি বলেন, আমি তাকে চিঠি দিয়ে আমার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছি। আজ আমাদের দরকার বিশ্বাস, স্বচ্ছতা ও অঙ্গীকার। আমরা শান্তি অর্জন করব।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও একে দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটি হামাসের প্রচারণাকে সহায়তা করে এবং ৭ অক্টোবরের ভুক্তভোগীদের প্রতি অপমান।
ম্যাক্রোঁর ঘোষণায় ইসরায়েল কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এটি সন্ত্রাসবাদের জন্য পুরস্কার এবং ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি তৈরি করে।
তিনি আরো বলেন, এই সিদ্ধান্ত গাজা যেভাবে ইরানের প্রক্সি হয়ে উঠেছে, তেমনি আরো একটি ইরান-সমর্থিত ঘাঁটি তৈরি হওয়ার ঝুঁকি তৈরি করছে, যা ইসরায়েলকে ধ্বংস করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে।
কেকে/এআর