ফেনীর সোনাগাজীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় কৃষকদের মনে বইছে বড় ধরণের শঙ্কা। অতি বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অনেক পুকুর ডুবে গেছে। আউশ আবাদ ও আমন ধানের বীজ তলা পানিতে ডুবে আছে পানিতে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার চরদরবেশ, চরচান্দিয়া, বগাদানা, মতিগঞ্জ ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকা গত দুই দিনের অতি বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় অনেক পুকুর ডুবে গেছে। আউশ আবাদ ও আমন ধানের বীজ তলা পানিতে ডুবে আছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কার্যালয় সূত্র জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলায় আউশ আবাদ, সবজি ও আমনের বীজ তলাসহ মোট মাঠে ৩ হাজার ৮শ ৭৮ হেক্টর দন্ডায়মান। এছাড়া বৃষ্টির কারণে চর দরবেশ ইউনিয়নের বাঁশ পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক ভাঙ্গনের খবরও পাওয়া গেছে।
চর চান্দিয়া ইউনিয়নের কৃষক আবু সাঈদ রুবেলের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত দুইদিনের ভারী বৃষ্টির কারণে চর চান্দিয়া ইউনিয়নের ৭ স্লুইস গেট সংলগ্ন খাল ও ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট সংলগ্ন ডাঙ্গী খাল থেকে দক্ষিণ দিকে চরের মাঝখানে বয়ে চলা সন্দ্বীপ চ্যালেনের সংযোগ শাখা খালটি কিছু অসাধু মৎস্য চাষী দখলে নেওয়ার কারণে পানি নিসনে বাঁধা পড়ছে। ফলে অতিভারী বৃষ্টির কারনে চরাঞ্চলের চাষযোগ্য প্রায় ২৫ হাজার একর আমন ধানের বীজতলা ও ৬ হাজার একর আবাদী ফসলের চারা পানিতে ডুবে নষ্ট হওয়ার আশংকা করছি।
মতিগঞ্জ ইউনিয়নের মোশারফ হোসেন নামের এক মৎস্য চাষি জানান, আমি ৩ একরের ২টি পুকুর সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে কর্মসংস্থানের আশায় চাষাবাদ করছি। ইতোমধ্যে ২ টি পুকুরই পানিতে ডুবে গেছে। এ বছর প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছের পোনা ও কলবি মাছ ফেলেছিলাম। খাদ্যসহ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা পুঁজি খাটিয়েছি। জানিনা এরপর আল্লাহ কপালে কি রেখেছেন।
উপজেলা মৎস্য অফিসার তাসলিমা জানান, ইতোমধ্যে ছোট ছোট মাছ চাষিরা তাদের পুকুর ডুবে মাছ চলে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়েছেন। ক্ষতির পরিমান এখনো পুরোপুরি জানা সম্ভব হয়নি। এভাবে বৃষ্টি হলে মৎস্য চাষিদের বড় ধরণের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাইন উদ্দিন আহমেদ সোহাগ বলেন, সোনাগাজী উপজেলায় এবার মাঠে তিন হাজার ১শ হেক্টর আউশ আবাদ, সবজি ৫৭৫ হেক্টর ও আমন বীজ তলা ২৩০ হেক্টরসহ মোট ৩ হাজার ৮শ ৭৮ হেক্টর দন্ডায়মান। এখন পর্যন্ত প্রায় ৫১৯হেক্টর পানির কারণে ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে। পানি অপসারণ হওয়ার পর চূড়ান্ত ক্ষতি নির্ধারণ করা সম্ভব হবে।
কেকে/এজে