চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বয়োবৃদ্ধ মা-বাবাকে দফা দফায় মারধর করে রক্তাক্ত জখম, ভাংচুর ও জায়গা দখল এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করার ঘৃণ্য অভিযোগ পাওয়া গেছে নাছির উদ্দিন ও তার স্ত্রী আমেনা বেগম রুনার বিরুদ্ধে। তাদের মারধর ও হয়রানী থেকে রেহায় পায়নি অন্য ২ পুত্রবধু, মেয়ে, মেয়ের জামাই এবং নাতি-নাতনিরাও। এবিষয়ে সালিশ-বিচার করতে গিয়ে লাঞ্চিত হয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মহিউদ্দিন।
ঘটনাটি ঘটেছে সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ছোট হাতিয়া গ্রামের কালামিয়ার পাড়া এলাকায়।
রোববার (২৯ জুন) সকালে ছেলের এ জুলুম-নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মা আনোয়ারা বেগম। এসময় তার স্বামী হাবিবুর রহমান, ৩ মেয়ে ও ২ পুত্রবধুও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ারা বেগম নিজের বড় ছেলে নাছির উদ্দিন অত্যন্ত খারাপ ও লোভী প্রকৃতির মানুষ। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী শাসনামলে স্থানীয় কিছু সন্ত্রাসী ও বখাটে প্রকৃতির মানুষের সাথে মিশে এবং তাদের কুপরামর্শে সে দিনদিন আরো বিপদগামী হয়ে উঠে। তার স্ত্রী আমেনা বেগম রুনাও তার নানা অপকর্মের অন্যতম সহযোগী জানিয়ে মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তিনি পৈত্রিকভাবে প্রাপ্ত ৮ শতক জায়গাতে বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। গত বছর দুয়েক থেকে নাছির উদ্দিন তার বসত ঘরের অর্ধেক অংশ দাবী করে। কিন্তু তার আরো ছেলেমেয়ে থাকায় বড়ছেলের এ অন্যায় দাবী না মানায় নেমে আসে নানা জুলুম-নির্যাতন। বহিরাগত সন্ত্রাসী এনে নাছির ও তার স্ত্রী রুনা মিলে আনোয়ারা বেগম ও তার স্বামীকে একাধিকবার মেরে রক্তাক্ত জখম করে। ধারালো ছুরিকাঘাতে তার স্বামীকে গুরুতর আহত করে। সে সামাজিক সালিশও মানেনা। তার পুত্রবধু মনোয়ারা বেগম মুন্নীকে মারধর করে। গুরুতর জখমের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান। তার নির্যাতনের প্রতিবাদ করায় তার মেয়ের জামাই ও নাতিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করায়। তার ২ নাতি এখনো কারাগারে।
তার স্বামী হাবিবুর রহমান বলেন, নাছিরের জুলুম-নির্যাতন থেকে রেহায় পেতে থানা পুলিশের কাছে গেলেও কোন সুরাহা পায়নি। তারা ধর্ম উপদেষ্ঠার নাম ব্যবহার করে থানা-পুলিশকে বিভ্রান্ত করে।
তাদের জুলুম-নির্যাতনের ব্যাপারে স্থানীয় মহিউদ্দিন মেম্বার বলেন, নাছির অত্যন্ত খাপার লোক। তার স্ত্রী রুনা আরো জঘন্য। তাদেও বিচার করতে গিয়ে আমি অনেক নাজেহাল হয়েছি। নাছিরের শালারা আমার মোটর সাইকেলটিও নিয়ে গেছে।
এদিকে অভিযোগের কোন সত্যতা নেই জানিয়ে নাছির উদ্দিনের স্ত্রী আমেনা বেগম রুনা বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের কোন ভিত্তি নেই। তারা সবাই মিলে আমাদেরকে মারধর করে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছে।
এ ব্যাপারে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ কয়েক দফায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সরেজমিনে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবেনা।
কেকে/ এমএস