জামালপুরে প্রবেশপত্র হাতে না পাওয়ায় এইচএসসি পরীক্ষায় দিতে পারেননি জামালপুর শহরের প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৭ জন শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে কলেজ ফটকের সামনে অবস্থান নেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা ও তাদের অভিভাবকেরা। কিন্তু গতরাত্রি দুইটার দিকে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের সহযোগিতায় আগেই প্রতিষ্ঠান থেকে চলে যান অধ্যক্ষ রেজাউল করিম সেলিমসহ অন্যরা।
প্রশান্তি আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজটি জামালপুর শহরের দরিপাড়া এলাকায় অবস্থিত। কয়েক বছর ধরে জামালপুর শহরে বেসরকারিভাবে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছিল প্রতারকচক্রটি।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দাবি, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত টাকা দাবি ও আদায় করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
পরীক্ষার্থী ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি থেকে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি না থাকায় জেলার অন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে ছাত্রদের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিম। এ জন্য অর্ধশত শিক্ষার্থীর প্রতিজনের কাছ থেকে ৯-১০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের অনেকেই প্রবেশপত্র পেলেও ১৭ জন শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র পাননি। ফলে তারা আজকের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। এ ছাড়াও শিক্ষার্থীদের প্রবেশ পত্র দেওয়ার সময় চার হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান।
প্রবেশপত্র না পাওয়া এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দুই দিন ধরে আমরা কলেজে ঘোরাঘুরি করছি। গতকাল রাত একটা পর্যন্ত কলেজেই ছিলাম। তখন রেজাউল করিম স্যার আমাদের বলেছিলেন, আজ সকালের মধ্যে প্রবেশপত্র পাব। কিন্তু সকালে গিয়ে দেখি, কলেজ গেটে তালা লাগানো। এর পর থেকে কলেজের কেউ আর ফোনও ধরছেন না। আমাদের জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে গেল। এর বিচার আমরা চাই।’
স্থানীয় কয়েকজনের ভাষ্য, অধ্যক্ষ রেজাউল করিম গত বছরও একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। ওই সময় অনেক শিক্ষার্থী প্রবেশপত্র না পাওয়ায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। ওই সময় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করেছিলেন। এবারও একই ঘটনা ঘটল। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
এ বিষয়ে ওই কলেজে গিয়ে অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম সেলিমকে পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে তালা ঝোলানো অবস্থায় দেখা গেছে। তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
জেলার শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হাসান বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, ‘প্রবেশপত্র না পাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। গতকালও যদি ওই সব পরীক্ষার্থী আমাদের বিষয়টি জানাত, আমরা শিক্ষা বোর্ডের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করতে পারতাম।
কেকে/ এমএস