পবিত্র ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিনেও রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে পশু কুরবানি। বিশেষ করে পুরান ঢাকা, লালবাগ, টিকাটুলী, মুগদা এবং বাসাবো এলাকায় সকাল থেকেই কুরবানির পশু জবাই ও মাংস প্রক্রিয়াকরণের ব্যস্ত দৃশ্য চোখে পড়েছে।
রোববার (৮ জুন) সকাল থেকেই কুরবানি শুরু হয়।
পুরান ঢাকার বংশাল এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, কয়েকটি বাসার সামনে পলিথিন টানিয়ে পশু কুরবানির প্রস্তুতি চলছে। আবার অনেকেই ইতোমধ্যে পশু কুরবানি সম্পন্ন করেছেন। তার কিছু দূরেই রাস্তার পাশে কয়েকজন তরুণ মাংস কাটছেন, পাশে দাঁড়িয়ে কসাই নির্দেশনা দিচ্ছেন। কিছু দূরে শিশু-কিশোররা দাঁড়িয়ে কুরবানির দৃশ্য দেখছে। লালবাগের বউবাজার, টিকাটুলীর জনবহুল গলি, মুগদা ও বাসাবোর অভ্যন্তরীণ বেশকিছু সড়কেও একই চিত্র দেখা যায়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল ঈদের দিন কসাই সংকট এবং সময় ও প্রস্তুতির অভাবে কুরবানি করতে না পেরে অনেকেই আজ করছেন। কারও কারও গরু হাট থেকে বাড়ি পৌঁছেছে ঈদের দিন রাতে। আবার কেউ কেউ ইচ্ছে করেই ভিড় এড়িয়ে আজ কুরবানি করছেন, যাতে সময় নিয়ে কাজ করতে পারেন।
পুরান ঢাকার লালবাগের বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের কসাই ঈদের দিন তিন জায়গায় কাজ নিয়ে ফেলেছিল। শেষ পর্যন্ত আমাদের সময় হয়নি। তাই আজ সকালে নিজেরাই জবাইয়ের ব্যবস্থা করেছি।
স্থানীয় যুবক মিল্লাত হোসেন বলেন, আমাদের কুরবানি কালকেই করেছি। কিন্তু আজ এক প্রতিবেশীর কুরবানিতে সহায়তা করছি। অনেকেই সময়ের অভাবে একদিনে শেষ করতে পারেননি।
মুগদার গৃহবধূ রোজিনা আক্তার জানান, আমাদের পরিবারে সব আত্মীয়-স্বজন মিলে কুরবানি দিয়ে থাকি। গতকাল সারাদিন নানা জায়গায় সবাই ব্যস্ত ছিলাম। তাই আজ সকালে সবাই মিলে একসঙ্গে কোরবানি দিয়েছি।
অন্যদিকে, আজও পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সিটি করপোরেশনের তৎপরতা দেখা গেছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, কুরবানির দ্বিতীয় দিনেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলছে। ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, যেসব এলাকায় আজ কুরবানি হচ্ছে, সেখানে আমরা নির্ধারিত পয়েন্টে কর্মী পাঠিয়ে বর্জ্য অপসারণ করছি। ঈদের তিন দিনই আমরা মাঠে থাকব।
টিকাটুলী এলাকায় কাজ করা ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতাকর্মী সবুজ আলম বলেন, কাল অনেক জায়গা পরিষ্কার করেছি, আজও সকাল থেকেই ব্যাগ-বালতি নিয়ে কাজে নেমেছি। অনেক বাসা থেকে নিজ উদ্যোগেও ময়লা নির্ধারিত পয়েন্টে আনা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ধর্মীয় দিক থেকে ঈদুল আজহার দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ ১১ জিলহজও কুরবানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের বর্ণনায় এ দিনটি মর্যাদাপূর্ণ বলে উল্লেখ রয়েছে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ দিন হলো কুরবানির দিন, এরপরের দিনটি। তাই অনেকেই আজও কুরবানি করছেন। শরিয়ত অনুযায়ী ১০ থেকে ১২ জিলহজ, মোট তিন দিন কুরবানি করার বিধান রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে যে কোনো দিন কুরবানি দেওয়া বৈধ, তবে প্রথম দিন কুরবানি করা সবচেয়ে উত্তম। সময়মতো কুরবানি না হলে তার পরিবর্তে সদকা করারও নির্দেশ রয়েছে।
কেকে/ এমএস