ভয়াল স্মৃতির ভার বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে, কেউ হারিয়েছেন সন্তান; আবার কেউ বাবা-মাকে, কেউবা জীবনের স্থায়ী ক্ষত নিয়ে বেঁচে আছেন। সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ভুলে যাওয়ার সাধ থাকলেও ভুলা যায় না। হৃদয়ের গভীর থেকে উঠে আসে সেই ভয়াল জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের কথা। স্মৃতির বেদনায় আবারও ব্যথিত হয় মন। এমন ব্যথাতুর বাস্তবতা বহন করা শহিদ ও আহত পরিবারগুলোর পাশে এবার দাঁড়িয়েছে নীলফামারীর শিল্পপ্রতিষ্ঠান নীলসাগর গ্রুপের মানবতার হাত।
বুধবার (৪ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক অনাড়ম্বর আয়োজনে গণ-অভ্যুত্থানে নিহত তিনজন ও আহত ১৭৪ জনের পরিবারের হাতে ঈদ উপহারসামগ্রী তুলে দেওয়া হয় নীলসাগর গ্রুপের পক্ষ থেকে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ ও আহতদের এ ত্যাগ আমাদের গর্ব ও প্রেরণার উৎস। নীলফামারীর শিল্পপ্রতিষ্ঠান নীলসাগর গ্রুপ দেশের প্রতি ভালোবাসা ও মানবিক দায়িত্ববোধ থেকে নিজস্ব উৎপাদিত খাদ্যসামগ্রীর একটি বড় প্যাকেজ উপহার হিসেবে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছে। এটি পরিবারগুলোর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এক ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র।’
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, নীলসাগর গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহসান হাবীব লেলিনের প্রতিনিধি শাহ্ মুমিনুল ইসলাম চৌধুরী, নীলসাগর কনজ্যুমার প্রোডাক্টের ডোর টু ডোর প্রকল্প ইনচার্জ আওরঙ্গজেব সুজন, ওয়ারিয়র্স অব জুলাই নীলফামারী কমিটির আহ্বায়ক সাইমুন সাকিব এবং ছাত্র প্রতিনিধি শ্রেষ্ঠ সরকার।
শাহ্ মুমিনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘নিহত ও আহতরা কেবল পরিসংখ্যান নয়, তারা আমাদের বিবেকের স্মারক। আমরা চাই—কেউ যেন ভুলে না যায়, কাদের রক্তে লেখা হয়েছে এ ইতিহাস।’
অনুষ্ঠানে নিহত ও আহত পরিবারগুলোর পক্ষে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি। দুই-একটি কথা বলতে গিয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনেকে।
উপস্থিত ছিলেন জেলা সদরের গোড়গ্রামের নিহত রুবেল (১৮)-এর বাবা রফিকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচণ্ডির নিহত নাঈম বাবু (১৭)-এর বাবা মোস্তফা, সৈয়দপুরের পাটোয়ারীপাড়ার নিহত সাজ্জাদ (৩৪)-এর বাবা আলমগীর, এবং ১৫৭ আহত ব্যক্তি ও তাদের স্বজনরা।
কেকে/এএস