গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের ময়েজ মিয়ার হাটে সরকারি জায়গা ছাড়তে না চাওয়ায় হাটের উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম (৩৫)-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
জাহিদুল ইসলাম সর্বানন্দ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফুল মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন হাটের জায়গাটি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মোজাম্মেল হকের দখলে ছিল। তিনি সেখানে পাকাঘর নির্মাণ করে দলীয় কার্যক্রমের পাশাপাশি ব্যবসা চালাতেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ওই জমি ও ঘর গোপনে বিক্রি করে দেন তৎকালীন হাট ইজারাদার ও মুদি ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলামের কাছে। সম্প্রতি হাটের উন্নয়নে সরকারি বরাদ্দ এলে সেড নির্মাণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু জাহিদুল ইসলাম তার দখলে থাকা ঘর না সরানোয় বাধাগ্রস্ত হচ্ছে উন্নয়ন কার্যক্রম।
হাটের ব্যবসায়ী আবদুল জলিল মিয়া বলেন, ‘সরকারি বরাদ্দে হাটে উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। আমিও ডিসিআর নিয়ে বৈধভাবে ব্যবসা করছি। প্রয়োজনে আমাকেও জায়গা ছাড়তে বলা হলে আমি সেটা মেনে নেব। কিন্তু জাহিদুল ভাই কোনো কথাই শুনছেন না, তাতেই সমস্যাটা তৈরি হয়েছে।’
অভিযুক্ত ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘মোজাম্মেল তার মেয়ের বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে পাঠাতে পারছিলেন না, কারণ ঘর-গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ছিল না। তখন তিনি ওই জমির পজিশন বাবদ আমার কাছে টাকা চান, কিন্তু আমি রাজি হইনি। কিছুদিন পর মোজাম্মেল, তার স্ত্রী ও সন্তানরা আমার বাড়িতে এসে তাদের অসহায়তার কথা বলেন। বিষয়টি আমাকে মর্মাহত করে। পরে আমি নিজের টাকায় তাদের মেয়ের জন্য ফার্নিচারসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দিই। এর কিছুদিন পর তার মেয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। পরে মোজাম্মেল এসে নিজে থেকে ওই জমির পজিশন আমার নামে স্ট্যাম্প করে দেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘জমিটা সরকারের, আমি শুধু পজিশনে থেকে ব্যবসা করছি। সরকার চাইলে আমি অবশ্যই জায়গা ছেড়ে দেব।’
হাটের ইজারাদার আল আমিন মিয়া বলেন, ‘আমি হাটের ইজারা নেওয়ার পর থেকে জাহিদুল কখনোই খাজনা দেননি। বর্তমানে হাটের উন্নয়নের জন্য সরকারি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেই বরাদ্দে সেড নির্মাণের কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু যেখানে তার ঘর রয়েছে, সেটা অপসারণ না করলে কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। অনেকবার বলার পরও তিনি কোনো কথা শুনছেন না। যার ফলে হাটের উন্নয়ন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’
এ বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা ছিল না। এখন বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
কেকে/ এমএস