মৌলভীবাজারে পৃথক দুর্ঘটনায় এক তরুণ ও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের দুর্লভপুর এলাকায় বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে আল আমিন (২৫) নামে এক তরুণের মৃত্যু হয়। শনিবার সকাল ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এরপরই বিক্ষুব্ধ জনতা হবিগঞ্জ-সিলেট বাস মালিক সমিতির দুইটি বাস ভাঙচুর করে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে দেড় ঘন্টা ধরে দেখা দেয় তীব্র যানজট। নিহত আল আমিন হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিলেটগামী ‘হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস’ নামের একটি বাসের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা আরোহী আল আমিন মারা যান। এ ঘটনায় আহত হন ৩জন। আহত তিনজনকে তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আহতরা হলেন হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি এলাকার জিয়াউর রহমানেরছেলে আব্দুর রশিদ (২৮), মিন্নত আলীর ছেলে হযরত আলী (২৮) ও আব্দুশ শহীদের স্ত্রী মিনা বেগম।
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আহমেদ ফয়সাল জামান বলেন, সড়ক দূর্ঘটনায় আহতরা হাসপাতালে আসলে একজনকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। বাকিদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি গাজী মাহবুবুর রহমান জানান, দুর্ঘটনায় ১জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। বাসটি আটক করা হয়েছে, তবে চালক পালিয়ে গেছে। নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
অপর দিকে জেলার কমলগঞ্জে কালনী ট্রেনে কাটা পড়ে হাওয়া বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতরে এই ঘটনাটি ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন তাকে উদ্ধার করে সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
স্থানীয় ও রেলওয়ে পুলিশ সুত্রে জানা যায়, হাওয়া বেগমের ডান হাত নেই। ট্রেনের ভেতরে ভিক্ষা করেই জীবন চালাতেন। শনিবার সকালে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা কালনী এক্সপ্রেস ট্রেনথেকে পড়ে ট্র্রেনের চাকায় তার দুটি পা কেটে যায়। পড়ে স্থানীয়রা তাকে উদ্বার করে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু সময় পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসার ডা. কিশোর পোদ্দার সম্রাট বলেন, সকাল ১১টার দিকে ট্রেন কাটা পড়ে আহত এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে আমরা প্রাথমিক চিকিৎসাপত্র প্রদান করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করি। তবে মৌলভীবাজার নেওয়ার আগেই ইসিজি করে নারীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই নারীর মৃত্যু হয়েছ বলে তিনি জানান।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত নারীর নাম হাওয়া বেগম বলে। তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।
কেকে/ এমএস