শতভাগ আবাসন, চাকসু নির্বাচন ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারসহ ৭ দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্রশিবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ( চবি) শাখা।
সোমবার ( ১৯ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকসু ভবন থেকে মিছিল বের করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর প্রশাসনিক ভবন হয়ে শহিদ মিনার অতিক্রম করে জিরো পয়েন্টে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভ মিছিলে ‘নারায়ে তাকবীর আল্লাহু আকবার’, ‘শিবিরের অপর নাম আদর্শের সংগ্রাম, এই ক্যাম্পাসের একক বীর ইসলামী ছাত্রশিবির, তোমার আমার অধিকার, চাকসু চাকসু, ‘জনে জনে খবর দে সেশন জটের কবর দে’, ‘জুলাইয়ের প্রশাসন, দাও শতভাগ আবাসন’, ‘চবি শিবিরের কয় দফা, সাত দফা সাত দফা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
বিক্ষোভ মিছিলে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলী বলেন, জুলাই এর পর নতুন প্রশাসন শহিদ হৃদয় তরুয়া ও শহিদ ফরহাদের রক্তের ওপর দাড়িয়ে আছে। আমরা এমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই যেখানে সকল শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা থাকবে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট এর নিশ্চয়তা প্রশাসনকে দিতে হবে। সমাবর্তনে উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসক এসেছিলেন কিন্তু প্রশাসন তার কাছ থেকে কিছু নিতে পারেনি। আমাদের অধিকার চাকসু আমাদের কাছে প্রশাসন বুঝি দিবে।
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘চবি শিবিরের সাত দফা শুধু আমাদের নয় প্রতিটি চবিয়ানদের প্রাণের দাবি। আমরা ভেবেছিলাম জুলাইয়ের উপর আসা প্রশাসন শিক্ষার্থীদের অধিকার পূরণে কাজ করবে। তারা কিছু কাজ করলেও অনেক কিছুই এখনো করেনি। আমরা এতদিন দেখেছি, এখন আর বসে থাকব না।’
তিনি আরো বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের সহযোগীরা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে রয়েছে। তারা আমার ভাই মুজাহিদ-মাসুদকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। মামুন এবং জোবায়েরকে গুলি করে হত্যা করেছে। তারা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছে। অতিদ্রুত ফ্যাসিবাদের দোসরদের ক্যাম্পাস থেকে বের করতে হবে। এসব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
এ সময় তিনি চবি ছাত্রশিবিরের সাত দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো- শতভাগ আবাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং আবাসন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অনাবাসিক সকল শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে। সকল বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে অনতিবিলম্বে সেশনজট নিরসন এবং শিক্ষার আধুনিকায়ন নিশ্চিত করতে হবে। পর্যাপ্ত ও নিরাপদ যাতায়াত সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। অনতিবিলম্বে চাকসু নির্বাচন দিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে টিএসসি স্থাপন, সেন্ট্রাল অডিটোরিয়াম নির্মাণ, কেন্দ্রীয় মসজিদ পুনর্নির্মাণ এবং আবাসিক হল ও অন্যান্য স্থাপনাসমূহ সংস্কার করতে হবে।
এছাড়া জুলাই বিপ্লব ও ফ্যাসিবাদী শাসনামলে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত শিক্ষার্থীদের স্থায়ী বহিষ্কার এবং জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে অবৈধ নিয়োগের সাথে জড়িত সকলের বিচার এবং নিয়োগপ্রাপ্তদের চাকরিচ্যুত করতে হবে।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ ইব্রাহিম রনি এবং শাখা শিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক খলীল আনোয়ার।
কেকে/ এমএস