দেশের সার পাচার হচ্ছে মায়ানমারে। আর এর মুল হোতা হিসাবে সন্দেহের তীর যাচ্ছে কৃষি কর্মকর্তার দিকে। মিয়ানমারের রাখাইনে অবৈধভাবে ৬০০ বস্তা ইউরিয়া সার পাচারকালে ১০ জন পাচারকারীকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। যার বাজারমূল্য ৮ লক্ষ টাকা। এই পাচারকারী চক্রের সাথে বিসিআইসির ডিলার ও কৃষি অফিসের লোকজন জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার সেন্টমার্টিন এর দক্ষিণে ছেড়া দ্বীপ এলাকা দিয়ে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পাচারের সময় তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এইচ এম এম হারুন-অর-রশীদ।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে ৫৮ দিনের মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞা চলমান আছে। এ অবস্থায় সেন্টমার্টিন এর দক্ষিণে ছেড়া দ্বীপ এলাকায় বোটটিকে দেখতে পেয়ে থামার সংকেত দেওয়া হয়। কিন্তু তারা অমান্য করে করে দ্রুত গতিতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে বোটটিকে জব্দ করে তল্লাশি করা হলে সেখানে ৬০০ বস্তা ইউরিয়া সার পাওয়া যায়। এসময় বোটে থাকা ১০ জন পাচারকারীকে আটক করা হয়। আটককৃতরা কক্সবাজার এবং চট্টগ্রামের বাসিন্দা বলে জানান তিনি।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার সারগুলো জব্দ হলেও কোস্টগার্ড গতকাল শুক্রবার বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে অবহিত করেন।
চকরিয়া উপজেলার সার ডিলার সৌরভ স্টোরের স্বত্বাধিকারী শওকত বলেন, ইউরিয়া সার ১৩২০ টাকা করে চট্টগ্রাম থেকে আনতে হয় এবং কৃষক পর্যায়ে সেই সার ১৩৫০ দরে বিক্রি করতে হয়। মিয়ানমারে পাচারের ঘটনায় তিনি বলেন, বাড়তি লাভের জন্য হয়তো মিয়ানমারে পাচার করছে।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, বেশি দামে ইউরিয়া সার বিক্রির জন্য বোট, ট্রলার নিয়ে ইউরিয়া সার ছাড়া-ও ডিএপি, এমওপি ও টিএসপি সারও মিয়ানমার চলে যায়। ১৩০০ টাকার ইউরিয়া সার ওই পরে ১৪৫০-১৫৫০ টাকা বিক্রি করেন ডিলাররা। এজন্য বেশি লাভের আশার তারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিয়ে যায়। তারা বলেন, একবার ধরা পড়লে আলোচনা হয়। প্রতি সপ্তাহে একবার করে বিপুল পরিমাণ সার মিয়ানমার যাচ্ছে।
ক্ষুব্ধ হয়ে কয়েকজন কৃষক বলেন, জমি আবাদ করে আমরা জমিতে সার দিতে পারছি না, ডিলারদের ঘরে ইউরিয়া নিতে গেলে বলে সার নাই। কখনো কখনো নষ্ট সার নিতে হয়।
নাম জানাতে অনিশ্চুক কয়েকজন বাংলাদেশ ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (বিসিআইসি) সার ডিলার বলেন, ‘এ পারকারী চক্রের সাথে বিসিআইসি সার ডিলার ছাড়াও কৃষি কর্মকর্তা জড়িত আছেন। যারা আটক হয়েছেন তাদের সাথে কথা বলা গেলে আসল রহস্য বেরিয়ে আসবে।’
জব্দকৃত সার টেকনাফ কাস্টমস এ হস্তান্তর করা হয়েছে এবং আটক পাচারকারী ও পাচার কাজে ব্যবহৃত বোটটি টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
কেকে/ এমএস