নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজেন গ্রামীণ সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও লোকজ শিল্পপসরায় ফুটিয়ে তুলে একটি বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। যেন লোকজ উৎসবে মেতে ওঠে বর্ষবরণে আসা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শিশু বৃদ্ধাসহ সব শ্রেণির মানুষ।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে সকালে উপজেলা পরিষদ হতে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বাদ্য ঢাকের তালে গোটা উপজেলা শহর প্রদক্ষিণ করে।
এ সময় থেমে থেমে লাঠি খেলায় মেতে ওঠে সব মানুষ। কিশোরগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে এসে শোভাযাত্রাটি শেষ হয়। এ সময় ফুটে ওঠে লাঠি খেলা, পালকিতে বৌ সাজ, ঘোড়ার পিঠে চড়ে মাথায় পাগড়ি ও মুখে রুমাল দিয়ে নতুন বর সাজ, গরুর লাঙল জোয়ালসহ হাল, মই, কৃষক-কৃষাণী, গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, পাকজাল খলাই নিয়ে জেলে, হুক্কা, হালখাতার লালসালু মোড়ানো নতুন খাতা নিয়ে মহাজনসহ গ্রামীণ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য।
এসব লোকজ উৎসব দেখে শিশু কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী আনন্দ উপভোগ করাসহ তাদের নানা কৌতূহল দেখা দেয়। তারা পরিচিত হয় গ্রামীণ এসব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে। তারা এসব দেখতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে। এতে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রাটি লোকজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের উৎসবে পরিণত হয়।
অন্যদিকে প্রমিলা ফুটবল দলের সদস্যরা এসো হে বৈশাখ শুভ নববর্ষ লেখা নিয়ে শোভাযাত্রার সামনের কাতারে থাকায় শোভাযাত্রাটির শোভাবর্ধক হয়েছে বলে অনেকে মন্তব্য করেন। এদিকে শোভাযাত্রা শেষে শুঁটকি ভর্তা, আলু ভর্তা, পাট শাক, কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ দিয়ে পান্তা ভাত খাওয়া উৎসব হয়। সবাই প্রাণ ভরে পান্তা ভাত খান।
এদিকে কিশোরগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে লোকজ মেলায় বাঁশ শিল্প, মৃৎশিল্প, কারুপণ্য, হস্তশিল্প, মিঠাই স্টলে ফুটে ওঠে গ্রামীণ শিল্পপসরায়। পরে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বৈশাখী কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পরে স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
এর আগে রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ হলরুমে শিক্ষার্থীদের নিয়ে রচনা প্রতিযোগিতা হয়। কিশোরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়। শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা গ্রামীণ এসব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে পরিচিত ছিলাম না। আজ বৈশাখী আন্দ শোভাযাত্রায় এসব দেখে পরিচিত হলাম।
এটি আমাদের প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে। বৈশাখী আনন্দ শোভাযাত্রায় বিভিন্নজন ভিন্ন ভিন্ন গ্রামীণ সাজে সেজেছে। তা শোভাযাত্রাকে আরও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে। শেষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হক বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
কেকে/এএস