কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে ফখরুল-তানিয়া দম্পতি ও তাদের সহযোগীদের প্রতারণা, মিথ্যা মামলা দায়ের, প্রিন্ট মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের প্রতিবাদে এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে হোসেনপুর পৌরসভার কাইছমা ১ নং ওয়ার্ডে হামলার শিকার গুরুদয়াল সরকারি কলেজ, কিশোরগঞ্জের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আমিনুল হক ও পাওনাদাররা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আহত অধ্যাপক আমিনুল হক লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, নিষ্ঠার সাথে সরকারি দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পিতা-মাতা ও পরিবারের দেখাশুনার জন্য কিছুদিন অন্তর অন্তর আমাকে নিজ গ্রামের পৈত্রিক ভিটায় যাতায়াত করতে হয়। এভাবেই গত ৪ এপ্রিল ২০২৫ শুক্রবার আমি নিজ পৈত্রিক ভিটায় অবস্থান করে ফখরুলের বাথরুম থেকে মলমূত্র আমার জায়গার উপর দিয়ে প্রবাহিত করলে আমি মাটি দিয়ে তা প্রতিরোধ করতে গেলে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ফখরুল-তানিয়া গং প্রতারক ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সংঘবদ্ধ অতর্কিত আক্রমণ করলে গুরুতর জখম হই এবং আমার বাম পায়ের ম্যাটা টারসাল হাড় ফ্যাকচার হয়। এ সময় ফখরুল আমার গলায় তার বাহু দিয়ে চেপে ধরে আমাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টা করে। একই সাথে এরশাদ, জহুরুল, মোফাকখারুল, মফিজ উদ্দিন, ইসমাইল, তানিয়া ও পারভীন লোহার রড ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পায়ে, পিঠে ও মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করতে চেষ্টা করে। এ ঘটনার সময় আমার পরিবার, নিকট আত্মীয় ও এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করতে গেলে তারাও সন্ত্রাসীদের মারপিটের শিকার হয়ে আহত হয়। পরে আমরা চিকিৎসার জন্য হোসেনপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি হই। পরবর্তী সময়ে আমার গুরুতর জখম দেখে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
তিনি অভিযোগ করেন, ফখরুল-তানিয়া গংদের এটিই প্রথম কোনো ঘটনায় নয়। বরং প্রায়শই আমার বসও বাড়ির অভ্যন্তরে অনধিকার প্রবেশ করে পরিবারের সদস্য ও আত্মীয় স্বজনকে পিঠিয়ে আহত করে, যার ভিডিও ফুটেজ সংগৃহীত আছে।
এছাড়া তিনি আরো বলেন, ফখরুল-ভ্রানিয়া গংদের অন্যায়, অত্যাচার ও নীপিড়নের পাশাপাশি অর্থ আত্মসাৎ এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে প্রায়শই আমিসহ এলাকার অনেক সাধারণ পরিবার হয়রানি ও আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। এ সকল বিষয়ে প্রতিকার চাইতে গেলে তারা নিজেদেরকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মী পরিচয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আনুকূল্য লাভ করে আমাদেরকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করে আসছে। এমনকি আমার একাধিক জায়গা-জমি দখল করে ফসলের ক্ষতিসাধন করে আসছে। গত ৪ এপ্রিল ২০২৫ আমার ও অন্যান্যদের উপর হামলার প্রতিকার চেয়ে ৬ এপ্রিল ২০২৫ হোসেনপুর থানায় একটি মামলা (মামলা নম্বর ৩, বাৎসরিক নম্বর ৪৫) দায়ের করলে ১ নং আসামী ফখরুল ইসলাম, পিতা. মফিজ উদ্দিন-কে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমি ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরকে প্রিন্ট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা-বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারসহ নানাভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়াও ৮ এপ্রিল ২০২৫ আমাদের নামে বানোয়াটভাবে হোসেনপুর থানায় একটি মামলা (মামলা নম্বর ৬, বাৎসরিক নম্বর ৪৮) করে। এ মামলার এজাহারে উল্লেখিত সকল তথ্যই মিথ্যা, যার প্রমাণ সিসিটিভি ফুটেজে সংরক্ষিত আছে।
এ অবস্থায় উপস্থিত বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, সরকার কর্তৃক নিয়োজিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যবৃন্দ, প্রশাসন এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার নিকট ফখরুল-তানিয়া গং দ্বারা আমাদের নিরাপত্তাহীনতা ও জানমালের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
পাওনাদার শামসুন্নাহার অভিযোগ করেন, ওই দম্পতি তার কাছ থেকে গরু ক্রয়ের জন্য প্রথমে ১ লক্ষ ও পরে ৮৫ হাজার টাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত দিচ্ছে না। টাকা চাইতে গিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছি।
উপজেলার ধলিহর গ্রামের পাওনাদার রোকসানা আক্তার অভিযোগ করেন, তিনি তার মেয়ের কাছ থেকে ৪ বছর পূর্বে ৫০ হাজার টাকা এনে দেয় ফকরুল-তানিয়াকে। টাকা চাইতে গিয়ে বারবার লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত তিনি টাকাগুলো না পেয়ে মানুষের দ্বারেদ্বারে ঘুরছে।
এ বিষয়ে হোসেনপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মারুফ হোসেন বলেন, ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে দুইজন আসামি জেল হাজতে আছে।
কেকে/ এমএস