ঢাকা, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

শিশুদের জানালা

তৌফিকুল ইসলাম
🕐 ১২:৩৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০১৯

তোমার প্রিয় টিভি চ্যানেল কোনটি? নিশ্চয়ই হাত তুলে দুরন্ত টিভির কথা বলবে। কারণ তোমাদের জন্য মজার মজার সব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয় এই চ্যানেলে, থাকে তোমাদের অংশগ্রহণও! অনেকেই তাই এই চ্যানেলকে বলে থাকেন ‘শিশুদের জানালা’, যার মাধ্যমে তোমরা পৃথিবীটা দেখতে পাও।

দুরন্ত টিভি আসলে শিশুদের স্বর্গরাজ্য, দেশের একমাত্র শিশুতোষ এ চ্যানেল এখন সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। ২ বছরেই চ্যানেলটি নিজেদের স্বকীয়তা জানান দিতে সক্ষম হওয়ার পাশাপাশি জয় করে নিয়েছে অভিভাবকদের আস্থাও। মা-বাবারা তাই বাচ্চাদের চ্যানেলটি দেখতে দেন নিঃসংকোচে। শুধু তাই না, অভিভাবকরাও বাচ্চাদের সঙ্গে এ চ্যানেলের অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। হয়তোবা নিজেরাও ফিরে যান চেনা শৈশবে এবং শিশুরা টিভিতে কী দেখে বড় হচ্ছে সেটি স্বচক্ষে দেখতে পারেন।

দুরন্ত টিভি প্রতি তিন মাস হিসেব করে মৌসুম আকারে তাদের অনুষ্ঠানমালা সাজিয়ে থাকে, যেটি বাংলাদেশে আর কোনো টিভি চ্যানেলই করে না। বর্তমানে তাদের অষ্টম মৌসুম শেষ হওয়ার পথে, আগামীকাল ১৩ অক্টোবর থেকে চ্যানেলটির নবম মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে।

দুরন্ত টিভির প্রোগ্রামগুলোও বেশ চমৎকার ও অনন্য, শুধুমাত্র শিশুদের কথা চিন্তা করেই চ্যানেলটির প্রোগ্রাম নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে চ্যানেলটিতে প্রচার হচ্ছে রঙ বেরঙের গল্প, সিসিমপুর, দুরন্ত স্বপ্ন, গল্প শেষে ঘুমের দেশে, টিরিগিরি টক্কা (সিজন ২), উল্টাপুল্টা : বাবা থাকে বাসায় (সিজন ২), রঙের খেলায় সুরের ভেলায় (সিজন ২), সোনার কাঠি রুপার কাঠি (সিজন ২), মায়া দ্য বী, সুইট লিটল মনস্টারস্, ট্রি ফু টম, স্পঞ্জবব স্কয়ারপ্যান্টস, দ্য জাঙ্গল বুক, ইনভিজিম্যালস, ক্লে কিডস, হেয়ারপোটর্, বালুপো ও উইস্পার, মীয়া ও টিপ দ্য মাউস, কেট এ্যান্ড মিম মিম ও লুকাস এ্যান্ড এমিলি, এলা বেলা বিঙ্গো ও দ্য ক্রোনোকিডস্।

গত ৫ অক্টোবর দুরন্ত টিভি তাদের পথচলার দ্বিতীয় বর্ষ পূর্ণ করলো। শুধুমাত্র শিশুদের জন্য বিশেষায়িত এ চ্যানেলটির সাফল্য ধরে রাখা প্রসঙ্গে দুরন্ত টিভির পরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, একটা টিভির সাফল্য পরিমাপের জন্য দুই বছর যথেষ্ঠ নয়। তবে এতটুকু বলতে পারি এ সময়ে আমরা যতটুকু পথ অতিক্রম করেছি, তাতে আমরা সুখী। তার মানে এই নয় যে আমাদের পথের অতিক্রম করা শেষ হয়েছে। কাজেই সাফল্য অনেক দূরে বলে আমরা মনে করি। দুরন্ত টিভি বাংলাদেশের শিশু ও তাদের পরিবারকে নিয়ে কাজ করে। সে অর্থে এটি বাংলাদেশের একটি শিশুতোষ ও পারিবারিক টিভি চ্যানেল। দেশ-বিদেশের টিভি চ্যানেল বা অন্যান্য বিনোদন মাধ্যম দেখলে বুঝতে পারবেন শিশুদের বিনোদনের অনেকগুলো মাত্রা রয়েছে। দুরন্ত টিভি তার সবগুলো উপস্থাপন করতে পেরেছে।

দুরন্ত টিভির অনন্য পথচলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিশুদের বিনোদনের জায়গাটা সীমিত। আমরা যখন দুরন্ত টেলিভিশনের কার্যক্রম শুরু করি তখন শিশুদের এ জায়গাটা তৈরি করার বড় একটা পয়েন্ট ছিল। এ জায়গাটা শুন্য ছিল দেখে আমরা ঠিক করি যে এ জায়গায় আমাদের কাজ করা উচিত। যেহেতু বাংলাদেশে তখন শিশুদের জন্য কোনো চ্যানেল ছিল না, তাই আমরা শিশুতোষ চ্যানেল হিসেবে দুরন্ত টিভিকে গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করলাম।

দুরন্ত টিভির জেনারেল ম্যানেজার (প্রোগ্রাম) মোহাম্মদ আলী হায়দার বলেন, গত ২ বছর বাংলাদেশের দর্শকরা আমাদের অত্যন্ত সাদরে গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের শিশুরা একটা নতুন দিগন্ত পেয়েছে, নতুন আকাশ পেয়েছে। নতুন একটা স্বপ্ন পেয়েছে, নতুন একটা চিন্তা করার জায়গা পেয়েছে সেটা হচ্ছে দুরন্ত টেলিভিশন। শিশুদের প্রতিদিনের ফিডব্যাক থেকে আমরা আমাদের অনুষ্ঠান নির্মাণ করছি। আমরা নতুন নতুন অনুষ্ঠান শিশুদের জন্য নির্মাণ করছি। বাংলাদেশের সমস্ত শিশু ও তাদের পরিবার আমাদের সঙ্গে আছে। এটি আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া। শিশুদের কাছ থেকে আমাদের অনুষ্ঠানে তারা কী দেখতে চায়, কী জানতে চায়, কেমন অনুষ্ঠান নির্মাণ হবে সে বিষয়টি নিয়ে জানার জন্য তাদের সঙ্গে আমরা বসি। তাদের কাছ থেকে আমরা অনেক রকম আইডিয়া পাই, সে আইডিয়া নিয়ে আমরা অনুষ্ঠান নির্মাণ করছি। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে। দুরন্ত টেলিভিশন বাংলাদেশের শিশুদের একটা চমৎকার আকাশ হিসেবে, চমৎকার জানালা হিসেবে আগামী দিনগুলোতেও থাকবে এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি।

 
Electronic Paper