ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Khola Kagoj BD
Khule Dey Apnar chokh

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পর্যটন শিল্প পাল্টে দেবে অর্থনীতি

আব্দুর রব নাহিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
🕐 ৯:৩৬ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০১৮

চাঁপাইনবাবগঞ্জ উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা। সারা দেশেই এ জেলার পরিচিতি গড়ে উঠেছে আম উৎপাদনকে কেন্দ্র করে। ফলে আমের রাজধানীর তকমা অনেক আগেই পেয়েছে এ জেলা। সারি সারি আম গাছ দেখলে সবার মন জুড়িয়ে যায়।

মুকুল শুরু করে গাছে গাছে পাকা আম সবই আকৃষ্ট করে। জেলার অর্থনীতির বড় অবদান রাখা এখানে উৎপাদিত আম। আর আম বাগানই হতে পারে জেলার অর্থনীতিকে পাল্টে দেওয়ার বড় নিয়ামক। আমকেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা গেলে জেলার অর্থনীতির চিত্রও পাল্টে যেতে পারে। সৃজনশীল চিন্তাসহ সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে তা করা সম্ভব।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আর কদিন পরেই বাজারে উঠবে খিরসা, হিমসাগর, ল্যাংড়া ফজলিসহ কত রকমের আম। একবার ভাবুন তো, আম বাগানে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরছেন। গাছে ঝুলতে থাকা একটা পাকা আম নিজ হাতে পেড়ে খেলেন। বিষয়টি লোভনীয় না? এ রকম সুযোগ পেলে মন্দ হয় না। আর আমের মৌসুমে দেশি-বিদেশি পর্যটক এ রকম সুযোগ পেলে অবশ্যই ঘুরতে আসবেন চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে শুধু আম বাগানই নয় এর বাইরে পর্যটকদের আকৃষ্ট করার মতো অনেক উপাদানই এখানে আছে। সারা জেলাজুড়েই রয়েছে নানা প্রাচীন নিদর্শন ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। তার মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক নির্দশন ছোট সোনা মসজিদ। এ ঐতিহাসিক স্থাপনার একটু দূরেই রয়েছে তোহাখানা। দারাসবাড়ি মসজিদসহ অসংখ্য নিদর্শন। তাছাড়া এ জেলার ঐতিহ্যবাহী গম্ভিরা গান যে কাউকে সহজেই আকৃষ্ট করে।
আলকাপ, কবি গান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিয়ের গীত সবই এক একটি পর্যটননির্ভর খাত বিকাশে সহায়ক হতে পারে।  
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর্যটন শিল্পের সম্ভাবনা নিয়ে স্থানীয় উদ্যোক্তরা এখন চিন্তা করছেন। গত এক বছরের ব্যবধানে এখানে তিন তারকা মানের হোটেল যাত্রা শুরু করেছে। এ ছাড়া অনেক স্থানীয় উদ্যোক্তা পর্যটন খাতে বিনিয়গে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তবে এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সরকারি উদ্যোগ বলে মনে করেন স্থানীয় উদ্যোক্তরা।
তরুণ উদ্যোক্তা ইসমাইন হোসেন জানান, বিদেশে মানুষ ঘুরতে যায় বিভিন্ন প্যাকেজের আওতায়। একই রকমভাবে আমকেন্দ্রিক ভ্রমণের প্যাকেজ হতে পারে। স্থানীয় পর্যায়ে এ ধরনের সেবাদানকারী কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা সম্ভব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান জানান, জেলা ব্যান্ডিং হিসেবে এ জেলাকে আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত করা হচ্ছে। এ বছর আম পাকা শুরু হলে একটা আম উৎসব জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে করার চিন্তা করছি। মূলত আম উৎসবের মাধ্যমে পর্যটননির্ভর শিল্প বিকাশের ধারণা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার চিন্তা থেকেই এ উদ্যোগ।
তাছাড়া শেখ হাসিনা সেতুর পাশে ৬২ একর জমির ওপর পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ৩০ কোটি টাকা। যা দিয়ে সীমানা প্রাচীন নির্মাণ ও ভূমি উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। আমরা চাই চাঁপাইনবাবগঞ্জের পর্যটননির্ভর শিল্প বিকাশে স্থানীয় উদ্যোক্তরা এগিয়ে আসুক। আমরা তাদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেব। পর্যটন এমন একটা শিল্প যা অন্য খাতগুলোকেও এগিয়ে যেতে সহযোগিতা করে। সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। আর এ শিল্পের বিকাশ ঘটলে জেলার অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে।

 
Electronic Paper