এক আদর্শবান শিক্ষক
নিজস্ব প্রতিবেদক
🕐 ৫:৪০ অপরাহ্ণ, জুলাই ০৭, ২০২২
চারপাশে মানুষের অভাব নেই। কিন্তু আপনি যদি সৎ, যোগ্য ও দায়িত্বশীল মানুষের কথা বলেন তাহলে আপনাকে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হবে। আর যদি নিজের সন্তানের জন্য আদর্শবান শিক্ষকের কথা ভাবেন, তাহলে তো কথাই নেই।
যদি প্রশ্ন করা হয়, মানুষ হিসেবে আপনি কাকে বেশি পছন্দ করেন? হয়তো আপনার সুবিধা ও অসুবিধা বিবেচনায় অনেকের কথা বলতে পারেন। ধরণও হতে পারে ভিন্ন।
কিন্তু যদি এমন হয়, আপনি একজন অভিভাবক হিসেবে কথা বলছেন, আর নিজের কলিজার টুকরো সন্তানটির প্রিয় মানুষ নির্বাচন করছেন, তাহলে আপনাকে অনেক বিষয় আমলে নিতে হবে। যেন আপনার সিলেকশন কোনোভাবেই ভুল না হয়। যে আপনার প্রশংসা পাবার যোগ্য নয়, তাকে প্রশংসাযোগ্য বানানো হলে সত্য ও ন্যায়ের অবমাননা করা হবে। সৎ ও যোগ্য মানুষ কোণঠাসা হয়ে পড়বে। আপনার মূল্যায়ন হবে প্রশ্নবিদ্ধ।
সম্মান পাওয়ার যোগ্য ব্যক্তিকে সম্মানিত করা হলে ভালোমানুষ তৈরির পথ প্রশস্ত হবে।
অনেকেই নিজেকে ভালোমানুষ দেখতে চাইবে। সমাজে শিক্ষকের অভাব নয়, কিন্তু এমন ক’জন আছে যারা শিক্ষকতার প্রকৃত মানসিকতা নিয়ে কাজ করছেন? যারাও-বা অবিশিষ্ট থাকেন মেকির দৈরাত্ম্যে তারাও চাপা পড়ে গেছেন। বলছিলাম, একজন আদর্শবান শিক্ষকের কথা। যিনি শিক্ষকতাকে শুধু পেশা নয়, বেছে নিয়েছেন মানবসেবার ব্রত হিসেবে।
নিবেদিত প্রাণ এই মানুষটি শিক্ষা প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য কোনো পদে অধিষ্ঠিত নন, তিনি একজন সাধারণ শিক্ষক। আপনি শিক্ষার্থীদের কোনো সমস্যা নিয়ে হাজির হলেই তিনি আপনার দিকে উপকারের হাত বাড়িয়ে দেবেন। চাইবেন আপনার উপকার করতে। যদি একটু সময়ও ব্যয় হয় তিনি তাতে একটুও কুণ্ঠাবোধ করবেন না। দেখা গেছে, আপনি অভিভাবক হিসেবে তার কাছে কোনো সমস্যা নিয়ে এসেছেন, তার সীমার মধ্যে থাকলে তিনি আপনার কাজটি করে দেবেন।
পারছেন না তিনি আপনাকে একটি সুন্দর পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করবেন। বিনিময়ে তিনি আপনার থেকে কিছুই গ্রহণ করবেন না। হয়তো একরাশ হেসে দিয়ে বলবেন, দিতে যদি কিছু চান, আল্লাহর দরবারে এর জন্য উত্তম প্রতিদান কামনা করুন। এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে!
গেটের সামনে দাঁড়িয়ে তাকে নিয়ে অনেক কথা হলো- অভিভাবকদের সাথে। জানলাম, অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া। অনেকেই সন্তুষ্ট তার উপর। প্রশংসা করছেন তার। কেউ বলেন ভীষণ আন্তরিক।
আবার কেউ বলেন, শিক্ষক হিসেবে তার জুড়ি নেই। তার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে জানা গেল, দায়িত্বের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত সচেতন। কখনো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব এড়িয়ে যান না। নির্ধারিত সময়ে স্কুলে প্রবেশ করেন। শ্রেণিকক্ষে যান ঠিক সময়ে। পড়ানোর মানও অত্যন্ত চমৎকার।
শিক্ষাগত যোগ্যতার খোঁজ নিয়ে জানা গেল, তিনি ইতোমধ্যে এমফিল ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। মাধ্যমিক পর্যায়ে পিরোজপুর জেলার শ্রেষ্ঠ শ্রেণিশিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন একবার। এরপর আর কখনো আবেদন করেননি।
এসব এর প্রতি তার মোহ নেই। তবে নিজ কর্মদক্ষতায় পিরোজপুরের কৃর্তিমান ব্যক্তি হিসেবে নিজের নাম বেশ আগেই লেখিয়ে নিয়েছেন। যার কথা বলছি তিনি হলেন পিরোজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।
তিনি বাংলাদেশের একজন বরেণ্য সাহিত্যিক ও গবেষক। তিনি দৈনিক প্রথম আলো, নয়া দিগন্ত, আমার সংবাদ, ইত্তেফাক, যুগান্তর সহ অনেক জাতীয় পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে প্রবন্ধ ও সাহিত্য বিষয়ে লেখালেখি করে সুনাম অর্জন করেছেন।