তাহিরপুর হাওরে চালু সূচকভিত্তিক শস্য বীমা
অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
🕐 ১১:০৫ অপরাহ্ণ, মে ০৫, ২০২০
৩১৬ কৃষককে সূচকভিত্তিক শস্য বীমার আওতায় আনার মধ্য দিয়ে হাওরাঞ্চলে শস্য বীমার যাত্রা শুরু হলো। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের তত্ত্বাবধানে বীমা কোম্পানি গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, সহযোগী প্রতিষ্ঠান অক্সফাম বাংলাদেশ এবং স্থানীয় সহযোগী সানক্রেড ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন পরীক্ষামূলকভাবে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর হাওর এলাকার এ সব কৃষককে বীমার আওতায় আনল।
এই বীমার আওতায় ফসলের ক্ষতি হলে বীমাকৃত কৃষক অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং বন্যার পানির উচ্চতা ও স্থায়ীত্বের ওপর নির্ভর করে বীমাদাবি পাবেন। নদীসৃষ্ট বন্যার ক্ষেত্রে ৬ দশমিক ৮ মিটারের বেশি পানি থাকলে এবং অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ক্ষেত্রে টানা ৩ দিনে ১২৫ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হলে সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতির ওপর স্থায়িত্বভেদে সর্বোচ্চ ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত বীমাদাবি পাবেন। ২৮ এপ্রিল ২০২০ থেকে ২২ মে ২০২০ পর্যন্ত এই বীমা সুবিধার সুযোগ থাকবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, নদীসৃষ্ট বন্যার পানির উচ্চতা ও অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত পরিমাপের জন্য ওয়াটার লেভেল স্টেশন ও স্যাটেলাইট ভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত ব্যবহার করা হবে, যা বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্কাইমেট ওয়েদার সার্ভিসেস লিমিটেড গ্রিন ডেল্টাকে প্রদান করবে।
করানোভাইরাস দুর্যোগের মধ্যে হাওরাঞ্চলের কৃষকের পাশাপাশি সরকার খুব উদ্বিগ্ন। বৈশাখজুড়ে বৃষ্টির কারণে হাওরাঞ্চলের ধান ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। ২০১৭ সালে পাহাড়ি ঢলে হাওরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসল ডুবে যায়।
এবার হাওরাঞ্চলে এরই মধ্যে ৯০ শাতংশ ধান কাটা হয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত হয়নি। এবার করোনা পরিস্থিতিতে বিশ^জুড়েই খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে হাওরে শস্য বীমা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষকরা চরম দুশ্চিন্তার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। এমতাবস্থায় বন্যায় ফসল নষ্ট হলে তারা আর্থিকভাবে আরো কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হবেন। দেশে খাদ্য সংকট তৈরি হবে। সূচক ভিত্তিক শস্য বীমা বন্যা হতে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি নিরসনের মাধ্যমে হাওর এলাকার অসহায় কৃষকদের পরবর্তী দিনগুলোতে আশার আলো হিসাবে দেখা দেবে এবং এখান থেকে পুরো দেশে শস্য বীমার যে যাত্রা তার সূচনা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে পাইলট প্রকল্পের অধীনে গ্রিন ডেল্টা ইন্সুরেন্স কোম্পানি অক্সফাম ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি ও সাঘাটা এলাকায় ৭৫০ জন কৃষককে সূচকভিত্তিক শস্য বীমার আওতায় আনা হয়।