বরিশাল বিআরডিবি
দুর্নীতি-অনিয়মের রানী উপ-পরিচালক সুপ্রিয়া বর
হেলাল উদ্দিন, বরিশাল
🕐 ৮:৪৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
![দুর্নীতি-অনিয়মের রানী উপ-পরিচালক সুপ্রিয়া বর](http://www.kholakagojbd.com/media/main/2025/01/147258.jpg)
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) বরিশালের উপ-পরিচালক সুপ্রিয়া বর’র বিরুদ্ধে অনিময় দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, অধীনস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি করে বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ অন্তত ১৮ অভিযোগ এনে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন জেলার বিআরডিবির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বরিশাল জেলার ১০ উপজেলার অন্তত ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এই অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন। অভিযোগকারীরা বলেন, এতদিন বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদনের ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছিলেন না অধীনস্থ কর্মচারীরা। কিন্তু এখন তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই তারা মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগ করেছেন। তবে এসব অভিযোগ কোন ভাবেই আমলে নিচ্ছেন না জানিয়েছেন সুপ্রিয়া বর।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ নিয়ে আমি মোটেও ভাবছি না। কারণ কাজ করতে গেলে অভিযোগ হয়েছে, হবে এটাই স্বাভাবিক।
বিআরডিবির মহাপরিচালক (গ্রেড-১) আঃ গাফফার খান বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। আমরা বিষয়টি প্রথমে তদন্ত করে দেখব। অভিযোগ প্রমানিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে বরিশালে উপ পরিচালক হিসাবে যোগদানের পর থেকেই সুপ্রিয়া বর বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, অতিমাত্রায় কর্তৃত্ব পরায়ণ, দুর্ব্যবহার, অশ্রাব্য ও অশালীন ভাষা প্রয়োগ ও অহেতুক হয়রানি সহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। এমনকি ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহার সময়ে প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বোনাস প্রদানের ক্ষেত্রেও অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য অহেতুক হয়রানি করে থাকেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়।
অভিযোগে বলা হয়, ২০২২ সালে জেলা দপ্তরে আইপিএস ক্রয়ের নামে প্রত্যেক উপজেলা থেকে ৯ হাজার টাকা করে মোট ৯০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে সম্পূর্ণ টাকাই আত্মসাৎ করেন তিনি। একই বছরে অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হলে সেখান থেকেও তিনি প্রত্যেক উপজেলা থেকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে ২০ হাজার টাকা করে মোট ২ লক্ষ টাকা চাঁদা হিসেবে উত্তোলন করেন এবং উক্ত টাকা পরবর্তীতে আত্মসাৎ করেন। চলতি বছর ফেব্রুয়ারী মাসে বরিশাল জেলা দপ্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ৩ দিনের একটি বিশেষ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রশিক্ষণের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাপ্য সম্মানী ভাতা ও দুপুরের খাবারের টাকা সহ সর্বমোট ২৯ হাজার টাকা প্রদান না করে সে টাকাও অভিনব উপায়ে হাতিয়ে নেন সুপ্রিয়া। গত ৫ মার্চ এজি অফিস কর্তৃপক্ষ জেলার দশটি উপজেলায় অবস্থিত বিআরডিবির সকল অফিসে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এবারও সুপ্রিয়া বর এজি অফিস কর্তৃপক্ষকে উৎকোচ দিতে হবে বলে ১০ টি উপজেলা অফিস থেকে ২৫ হাজার টাকা করে আড়াই লাখ টাকা উত্তোলন করেন।
অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিয়া বলেন, আই ডোন্ট কেয়ার। কে কি করলো তা নিয়ে ভাবার সময় নেই। এ সময় প্রতিবেদককে তিনি আরো বলেন, আশা করি আপনিও এর পিছনে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করবেন না। সত্যি অভিযোগ করে থাকলে কর্তৃপক্ষ তা দেখবে।
বিআরডিবির মহাপরিচালক আ. গাফফার খান বলেন, আমরা কোন অভিযোগ এড়িয়ে যাই না। যেহেতু অভিযোগ এসেছে আমি তদন্ত করে দেখব। প্রমাণিত হলে বদলিসহ বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
![](http://www.kholakagojbd.com/images/archive-image.jpg)