সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫,
২৮ আশ্বিন ১৪৩২
বাংলা English
ই-পেপার

সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম: ১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার      জিয়া পরিবার জনগণের পরিবার : আমান উল্লাহ      রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      ২০০ তালেবান সৈন্যকে হত্যার দাবি পাকিস্তানের      বাতিল হওয়ার শঙ্কায় বিশ্বজয়ী আর্জেন্টিনার ভারত সফর      বিচারব্যবস্থাকে ব্যবহার করে দেশে স্বৈরশাসন পাকাপোক্ত হয়েছিল      প্রেসক্লাবে শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে সাউন্ড গ্রেনেড-লাঠিচার্জ      
অর্থনীতি
আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:৫৫ পিএম আপডেট: ২২.১০.২০২৪ ৫:০৬ পিএম

সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের আর্থিক দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারি ও অর্থপাচারের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থাগ্রহণে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবির গত ২০ বছর অবৈধভাবে চেয়ারম্যান পদ আঁকড়ে ধরে রাখেন। এ সময়ে তিনি আর্থিক দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারি, অর্থপাচারের মতো গুরুতর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হন। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর ঘটনা হচ্ছে তিনি সাউথ ইস্ট ব্যাংকের অর্থে তার ছেলে রাইয়ান কবিরকে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের পরিচালক বানিয়েছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, আলমগীর কবির নানা ফন্দি ফিকির করে ২০০৪ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়াম্যানের দায়িত্বে আসেন। এর পর থেকে টানা ২০ বছর এই পদ নিজের দখলে রাখেন। এই সময়ে অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়েছেন। পাশাপাশি অন্য পরিচালক ও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আপত্তি থাকা সত্ত্বেও নিজ লোকদের ঋণ দেয়া এবং চলতি ঋণের সুদ মওকুফ করে দেয়ার মতো ঘটনা ঘটান।

সেই সঙ্গে ঋণ অনিয়মের বাইরে ব্যাংকের কেনাকাটা, শাখা সম্প্রসারণ, শাখা ইন্টেরিয়র, ব্যাংকের বুথ বসানো এবং সফটওয়্যার সরবরাহের নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন আলমগীর কবির। দুর্নীতি ও কারসাজির মাধ্যমে তিনি দেশ ও দেশের বাইরে হাজার কোটি টাকার সম্পদ গড়ে তুলছেন। এসব অর্থ কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও দুবাইয়ে পাচার করেছেন।

এছাড়া কানাডার বেগমপাড়া, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ার আমপাং এলাকায় তার বাড়ি রয়েছে। দুবাইয়ে বিলাসবহুল হোটেল ও বার রয়েছে। তাছাড়া ঢাকার গুলশান অভিজাত এলাকায় একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। গাজীপুরে রয়েছে বাড়ি। শ্রীপুর, ভাওয়াল ও কাঁচপুরে তার অন্তত ১৫০ বিঘা জমি রয়েছে। আলমগীর কবির চেয়ারম্যান পদে থেকে ব্যাংকের টাকায় ন্যাশনাল লাইফ ইস্যুরেন্স, বে লিজিং ও এশিয়া ইস্যুরেন্সের বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি সুদ মওকুফের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিপোর্ট করতে হয়। আলমগীর কবির ইন্টারেস্ট রেপিড নামে এক পদ্ধতি করে লে মেরিডিয়েনের ঋণের সুদ মওকুফ বা ওয়েভার বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্টিং এড়িয়ে গেছেন, যা ব্যাংক খাতের নিয়ম পরিপন্থী।

আলমগীর কবির কেয়া গ্রুপের ৯০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেন। কেয়া গ্রুপকে সাউথইস্ট ব্যাংকের সিঙ্গেল বরোয়ার এক্সপোজার লিমিট অতিক্রম করে। অতিক্রম করা সত্ত্বেও তিনি ঋণটি দেন মূলত শত কোটি টাকার কমিশনের বিনিময়ে। এছাড়া ফাহমী নিটরে ৩০০ কোটি টাকা ও মাহাবুব স্পিনিংয়ে ১৫০ কোটি টাকার ঋণ বেআইনিভাবে বিতরণ করেন।

সাউথইস্ট ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার জন্য প্রায় ৫০০টি ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) বসানো হয়। এসব মেশিন ছিল খুবই নিম্নমানের। এছাড়া এসব মেশিন স্বাভাবিক বাজারদরের চেয়ে বেশি মূল্যে কেনা হয়। এক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্যের অতিরিক্ত অর্থ ওভার ইনভয়েসিংয়ে মাধ্যমে বিদেশে পাচার করা হয়েছে। ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা তিন কোম্পানিতে পাঠানো হয়েছে। এগুলো হলো আরঅ্যান্ডএন ট্রেড হোল্ডিংস প্রাইভেট লিমিটেড, ই-এক্সচেঞ্জ সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড ও আরঅ্যান্ডএন মেরিন অ্যান্ড শিপ ট্রেড প্রাইভেট লিমিটেড। এসব প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা ১০০ অর্চার্ড রোড, ০১০৩ সি এবং কনকর্ড হোটেল অ্যান্ড শপিং মল ২৩৮৮৪০। এতে প্রায় ২০ কোটি টাকার অধিক অর্থ শেয়ার মানি/ইকুইটি হিসেবে বিনিয়োগ করা হয়েছে।

এছাড়া আলমগীর কবির সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রতিটি শাখায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত দুটি সিডিএমএটিএম মেশিন বসান। প্রতিটি সিডিএম, এটিএম মেশিন শুধু জারা জামান টেকনোলজিনের কাছ থেকে কেনা হয়। প্রত্যেকটি এটিএমের জন্য ৮ দশমিক ২ লাখ টাকা থেকে ২৬ দশমিক ৯৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিল করা হয়েছে, যা স্বাভাবিক বাজারদরের তুলনায় দু-তিনগুণ বেশি।

২০২১ সালে সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে তিন মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানালেও অজ্ঞাত কারণে সেই সময়ে দুদক বা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এসব নানা অভিযোগে সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের বিরুদ্ধে উত্থাপিত আর্থিক দুর্নীতি, ঋণ জালিয়াতি, পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারি ও অর্থপাচারের বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থাগ্রহণে দুদক চেয়ারম্যানের মর্জি কামনা করা হয়।

এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে আলমগীর কবিরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

কেকে/এমআই
আরও সংবাদ   বিষয়:  সাউথইস্ট ব্যাংক   আলমগীর কবির   দুর্নীতি   ঋণ জালিয়াতি  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

মধ্যরাতে ঢাবি ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ
ট্রাক ভাড়া করে ঘুরে ঘুরে ডাকাতি করত তারা
শিশু বলাৎকার ও হত্যার অভিযোগে কিশোর গ্রেফতার
১১ দিনে রেমিট্যান্স এলো প্রায় এক বিলিয়ন ডলার
মুরাদনগরের ওসি জাহিদুরের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বসহ নানা অভিযোগ, অপসারণ দাবি

সর্বাধিক পঠিত

আসছে নাটক ‘অপ্রকাশিত ভালোবাসা’
রাজশাহীতে বিশ্ব পরিযায়ী পাখি দিবস পালিত
চিকিৎসক ও জনবল সংকটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা
নির্বাচন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে : তানভীর হুদা
পাল্লা বাজারে রক্তলাল শাপলার মনভোলানো সমাহার

অর্থনীতি- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2025 Kholakagoj
🔝
close