গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় রাস্তার অনিয়ম খুঁজতে গেলে সংবাদকর্মীকে ঠ্যাংয়ের নালা ভেঙে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ ওঠেছে এক ওয়ার্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে। হুমকির ৪ মিনিট ২৫ সেকেন্ডের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা জন্ম নেয়।
সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হুমকির অডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক সিহাব খান (৩৬) পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কেওয়া পূর্বখণ্ড গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিম খানের ছেলে। তিনি এটিএন নিউজের শ্রীপুর প্রতিনিধি।
অভিযুক্ত ওয়ার্ড সদস্য মো. নূরে আলম (৫০) উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে। তিনি গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া অডিওতে শোনা যায়, অপরিচিত এক নাম্বার থেকে ওয়ার্ড সদস্যের ছেলে কাজল সাংবাদিক সিহাব খানের মুঠোফোনে ফোন করে সালাম বিনিময় করে বলে আমি কাজল, ওয়ার্ড সদস্য নূরে আলমের ছেলে। আপনি কি সাংবাদিক সিহাব ভাই? আপনি কোথায় আছেন? আপনি কি গাজীপুর আসছিলেন? তারপরে, গাজীপুর আসছিলেন যে এখানে বাড়ির রাস্তা করতেছে। আপনি মেম্বারকে ফোন দিবেন।
এ সময় সিহাব খান বলেন, ‘কেন আপনাকে ফোন দিবো।’ এ সময় উত্তেজিত হয়ে ওয়ার্ড সদস্যের ছেলে কাজল বলেন, আপনি করবেন না মানে। এ সময় ওয়ার্ড সদস্য উত্তেজিত হয়ে মুঠোফোনে বলেন, ‘আপনি কে জানি? বেডার রাস্তা বেডা ট্যাহা দিইয়া করতাছে। আপনি ইউএনওকে ফোন করেন ক্যান। আপনারা যে বাটপার হয়েছেন। আমার এলাকায় আসলে ঠ্যাংয়ের নালা ভাইঙ্গা (ভেঙে) ফেলবো। এঁরা বাটপারি ছাড়া কিছুই করে না। ছয় নাম্বার ইট দিইয়া রাস্তা করলে তোর সমস্যা কি। শুয়োরের বাচ্চা, দালালের বাচ্চা।’ এ সময় ওয়ার্ড সদস্য উত্তেজিত হয়ে গালি দিয়ে বলেন, ‘তোর ইনকাম সোর্স কি। মাসে ইনকাম কি? তরে শ্রীপুর থানার মধ্যে যেহানেই (যেখানে) পাবো মাইরা (মেরে) ঠ্যাং ভাইঙ্গা দেম।’
সিহাব খান বলেন, ‘আজ সোমবার দুপুরের দিকে গাজীপুর ইউনিয়নের গাজীপুর গ্রামের বাবুলের বাড়ির রাস্তার ইট সলিং কাজ হচ্ছে। যেখানে নির্মাণ কাজে নিন্মমানের ইট ব্যবহার হচ্ছে। এ সময় ভিডিও ছবি ধারণ করে সেগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হোয়াটসঅ্যাপ পাঠিয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে বক্তব্য চাই। এর কিছুক্ষণ পর একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে। অপরপ্রান্ত থেকে ওয়ার্ড সদস্যের ছেলে পরিচয়ে ছালাম বিনিময় করে রাস্তার বিষয়ে জানতে চান। তখন উত্তেজিত হয়ে প্রথমে ওয়ার্ড সদস্যের ছেলে হুমকি দেয়। এর কিছুক্ষণ পর ওয়ার্ড সদস্য উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘তার এলাকায় গেলে ঠ্যাংয়ের নালা ভেঙে দিবে।’
তিনি জানান, এ ধরনের হুমকির পর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
অভিযুক্ত মো. নূরে আলম বলেন, ‘আমি রাগের মাথায় এই কথা বলে ফেলছি। আমি রাস্তায় কোন ধরনের নিন্মমানের ইটা ব্যবহার করেনি কোন দিন। সাংবাদিক আমাকে না জানিয়ে উপরের স্যারদের জানিয়েছে বলে একটু রাগে এমন কথা বলেছি।’
গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. মাহবুব আলম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত করে মামলা রুজু করা হচ্ছে।’
কেকে/ এমএ