দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) শিবির নেতা কর্তৃক শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে ।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বাসে কথা বলাকে কেন্দ্র করে উক্ত ঘটনা ঘটেছে।
ইংরেজি ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সাব্বির আহমেদ তানভীরকে ছুরিকাঘাত করেছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আনসারুল ইসলাম। তিনি শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলের ইসলামি ছাত্র শিবিরের সভাপতি।
রাত ৯টায় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন। সেখানে তারা উচ্চস্বরে কথা বললে আনসারুল ইসলাম তাদের আস্তে কথা বলতে বলেন। তারা তখন অন্য দিকে ঘুরে কথা বলেন। পরে তাদের মাঝে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
আহত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে নেমে বলে তোদের দেখে নিবো তোদের তুলে নিয়ে গেলে কে কি করবে এই বলে হুমকি দেন। ।
ছুরিকাঘাতে আহত শিক্ষার্থী মো. সাব্বির আহমেদ তানভীর বলেন, আজকে আমাদের ইংরেজি বিভাগের ২২ ব্যাচের ফলাফল দিয়েছে। মোটামুটি সকলেরই ভালো ফলাফল হয়েছে। তাই বন্ধুরা মিলে শহরে খেতে গিয়েছিলাম। রাত ৯টার বাসে ক্যাম্পাসে ফিরছিলাম। আমরা কথা বলার এক পর্যায়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আনসারুল ইসলাম ভাই আস্তে কথা বলতে বলেন। আমরা অন্যদিকে ঘুরে আস্তে কথা বলার চেষ্টা করি।
পরে আনসারুল ভাই বলেন, তোদের ব্যাচ কত? আমি ১৯ ব্যাচ হয়ে কথা বলছি কথা কানে যায় না? তখন আমরা বলি আমরাতো ভাই অনেকে আছি তাই একটু জোড়ে কথা হচ্ছে। তখন তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে গিয়ে তোদের দেখে নিচ্ছি। তোদের তুলে নিয়ে গেলে কে আসবে। এই বলে ক্যাম্পাসে আসার পর তিনি হলুদ রঙের ছুরি বের করে এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন। এতে আমিসহ আমার বন্ধুরা আহত হয়।
তানভীর আরো বলেন, পরে আমাকে সেইফ করার জন্য শিবিরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকেই চলে আসে। এটাই প্রতীয়মান হয় যে, তিনি শিবিরের লোক। শিবির দ্বারা এমন ঘটনার আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল বলেন, টিএসসিতে ছিলাম হঠাৎ ফোন আসে যে আমার হলের এক ছোট ভাইকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আসার পরে জানতে পারি আনসারুল ইসলাম ছুরিকাঘাত করেছে। তিনি জিয়া হলের সভাপতি বলে আমরা জানি। যেই সংগঠনের লোকই অন্যায় করুক না কেন তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার হতে হবে। তিনি মন্তব্য করেন, এ সকল ঘটনা এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠন দরকার।
আহত হওয়া অন্যান্য শিক্ষার্থীরা হলেন এগ্রিকালচারাল এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২ ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. নাঈমুর রহমান দুর্জয়, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জয়।
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মিছিল করেছে। অপরদিকে হাবিপ্রবি ছাত্রদলও শিক্ষার্থীর ওপর ছুরিকাঘাতের ঘটনার বিচার চেয়ে মিছিল করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত আনসারুলকে হল থেকে সাময়িক বহিস্কার করেছে। তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে হাবিপ্রবি শাখা ইসলামি ছাত্র শিবিরের সাধারণ সম্পাদক শেখ রিয়াদের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তৎক্ষনাৎ ফোন রিসিভ করেননি।
অভিযুক্ত আনসারুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাইক্রো গাড়িতে রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির বাহিরে দুই গাড়ি পুলিশ অবস্থান করছে।
কেকে/বি