পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের পদচারণা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই সীমান্ত উপজেলা এখন পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য। সমতলের চা বাগান, বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট ও নির্মল আকাশে ভেসে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য দেখতে প্রতিদিনই ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা।
তবে দীর্ঘদিন ধরেই তেঁতুলিয়া ভ্রমণে আসা পর্যটকদের বড় একটি সমস্যা ছিল রাত্রিযাপন ও আবাসন সংকট। পর্যাপ্ত হোটেল-রিসোর্ট না থাকা, অনলাইনে তথ্য না পাওয়া ও স্থানীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে অনেকেই ভোগান্তিতে পড়তেন। কিন্তু এবার এই দুশ্চিন্তা কাটাতে তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রশাসন নিয়েছে ব্যতিক্রমধর্মী এক উদ্যোগ।
পর্যটকরা এখন থেকে ঘরে বসেই অনলাইনে পছন্দের হোটেল বুক করতে পারবেন। এমনই সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে নতুন একটি সরকারি ওয়েবসাইটে: https://tetuliahotels.gov.bd
উপজেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে পাইলটিং হিসেবে নির্মিত এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে তেঁতুলিয়ার সব আবাসিক হোটেল, রিসোর্ট ও কমিউনিটি ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যাবে। তেঁতুলিয়া উপজেলার সব আবাসিক হোটেল মালিক, পরিচালক ও তত্ত্বাবধানকারীরা ওয়েবসাইটে অন্তর্ভুক্তির জন্য আগামী ২২ অক্টোবরের মধ্যে ওয়েবসাইটের ‘হোটেল রেজিস্ট্রেশন’ মেন্যুতে ঢুকে নিজেদের নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।
আরিফ হাসান নামে ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক বলেন, ‘তেঁতুলিয়া ঘুরতে আসার আগে হোটেল খোঁজা নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় পড়তে হয়। এবার অনলাইনে বুক করতে পারলে সময় ও ঝামেলা দুটোই কমবে।’
পর্যটক ইলমা বলেন, ‘আমরা সাধারণত পরিবার নিয়ে আসি। আগে আবাসনের অনিশ্চয়তায় শেষ মুহূর্তে দুশ্চিন্তা হতো। এখন অনলাইন ব্যবস্থায় আসা যেন আরও স্বস্তির। আশা করি, এই এলাকার পর্যটন আরও এগিয়ে যাবে- তার জন্য সংশ্লিষ্টরা এমন উদ্যােগ নেবেন।’
স্থানীয় পর্যটন প্রতিষ্ঠান নর্থবাংলা ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজমের পরিচালক এম মোবারক হোসাইন বলেন, ‘উপজেলা পরিষদের এই উদ্যোগকে আমরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। এত দিন পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য বেশ কষ্ট করতে হতো। এখন অনলাইনে বুকিংয়ের সুযোগ থাকায় তাদের ভ্রমণ আরও সহজ হবে।’
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আফরোজ শাহীন খসরু বলেন, ‘তেঁতুলিয়া এখন দেশের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ। কিন্তু পর্যাপ্ত তথ্য ও আবাসন ব্যবস্থার ঘাটতির কারণে পর্যটকরা ভোগান্তিতে পড়তেন। এই অনলাইন হোটেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু হলে সেই সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে। পর্যটকরা আগেই বুকিং দিতে পারবেন, আবার স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও এতে উপকৃত হবেন।’
কেকে/ এমএ