অবকাঠামোগত দুরবস্থা, জনবল ও যানবাহন সংকটে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানা পুলিশ কার্যত হিমশিম খাচ্ছে। পরিত্যক্ত ও জরাজীর্ণ ভবনে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে পুলিশ সদস্যদের। বিশুদ্ধ পানির অভাব, পর্যাপ্ত জ্বালানি বরাদ্দ না থাকা ও সীমিত জনবল নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কঠিন পরিস্থিতির মুখে পড়েছে থানাটি।
একটি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা। সোনাইমুড়ীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে পুলিশকে ফাঁড়ি থেকে থানায় রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে থানা এলাকার ভবন অত্যন্ত পুরানো, জরাজীর্ণ ও বসবাসের অনুপযোগী। এখানকার সব ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ।
জানা যায়, সোনাইমুড়ী থানা পুলিশকে পরিত্যক্ত ভবনে কোনো রকমে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। এ ছাড়াও নেই দৈনন্দিন ব্যবহার ও খাওয়ার জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাও। ১৭০ দশমিক ৪২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সোনাইমুড়ী থানায় ২০২২ সালের জনশুমারি অনুযায়ী রয়েছে মোট জনসংখ্যা ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৮৪২ জন। এই জনসংখ্যার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন ১ জন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ১ জন ওসি (তদন্ত) উপপরিদর্শক (এসআই) ৮ জন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ১০ জন ও ২৮ জন কনস্টেবলসহ প্রায় ৫০ জন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত থানায় ৪টি গাড়ি থাকলেও বর্তমানে রয়েছে মাত্র ২টি গাড়ি। গাড়িতে ব্যবহারের জন্য ২৫-৩০ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫ লিটারের। ২০০৬ সালে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে থানায় রূপান্তরিত হলেও বর্তমানে এখানে নেই প্রয়োজনীয় জনবল।
এ অবস্থায় এলাকায় অপরাধ দমনে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে সোনাইমুড়ী থানা কর্তৃপক্ষের। থানা ভবনের দ্বিতীয় তলায় টিনশেড ঘর নির্মাণ করে ফোর্সের আবাসিক ব্যবস্থা করা হয়। সেখানে ৫ জনের স্থানে গাদাগাদি করে রাতযাপন করেন ৮-১০ জন। থানা পুলিশের ব্যারাকে ১৫ জনের মধ্যে থাকে ২০-২৫ জন। আর অফিসারদের জন্য কোনো থাকার ব্যবস্থা নেই। ১৫ আগস্ট পুড়িয়ে দেওয়া থানা ভবন ও অন্যান্য ভবন কোনোরকম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে থাকছে পুলিশ সদস্যরা। সেবা-প্রার্থীদের বসার কোনো স্থান নেই।
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন বলেন, ‘এই থানায় জনবল অনুযায়ী নেই বসবাসের সুব্যবস্থা। একটি পরিত্যক্ত ভবনে কোনোরকম গাদাগাদি করে থাকতে হয়। বিশুদ্ধ পানিরও রয়েছে চরম সংকট। বরাদ্দকৃত গাড়ির জন্য ২৫-৩০ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও সরকারিভাবে বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ৫ লিটার তেল। এ অবস্থায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খেতে হচ্ছে থানা পুলিশের।’
এসব সংকট ও সমস্যার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সোনাইমুড়ী থানার ওসি মোরশেদ আলম।
কেকে/ এমএ