কাতারের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান ও আফগানিস্তান তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। যুদ্ধবিরতির এই উদ্যোগে কাতারের পাশাপাশি সহ-মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্ত ছিল তুরস্কও।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোববার (১৯ অক্টোবর) ভোরে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
গত শনিবার (১৮ অক্টোবর) দোহায় এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেয় পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের প্রতিনিধিদল। আলোচনার ফলস্বরূপ উভয় দেশ তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যুদ্ধবিরতি কার্যকর রাখার লক্ষ্যে দুই দেশ ভবিষ্যতে ফলোআপ বৈঠক করবে বলেও জানানো হয়েছে।
আলোচনায় আফগানিস্তানের পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।
২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। তবে গত দুই সপ্তাহে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে বড় ধরনের অবনতি ঘটে। সীমান্ত এলাকায় সামরিক সংঘর্ষে শতাধিক প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
পাকিস্তান দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে, আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), নিরাপদ আশ্রয় পাচ্ছে। এই অভিযোগের জেরে দুই সপ্তাহ আগে কাবুলে বিমান হামলা চালায় পাকিস্তান। জবাবে আফগান বাহিনী সীমান্ত এলাকায় পাক সেনাদের ওপর হামলা চালায়, যা সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এর আগে, গত সপ্তাহে দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার জন্য একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। যদিও সেই যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই পাকিস্তান নতুন করে আফগান সীমান্তে বিমান হামলা চালায়। যদিও তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেছিলেন, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
গত শুক্রবার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে টিটিপির আত্মঘাতী হামলায় সাত পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়। এরপর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে। আফগান সরকার শুরু থেকেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
পরিস্থিতি শান্ত করতে কাতার ও তুরস্কের এ কূটনৈতিক উদ্যোগকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন দেখার বিষয়, এই যুদ্ধবিরতি কতটা স্থায়ী হয় এবং উভয় পক্ষ কতটা আন্তরিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছাতে পারে।
কেকে/এআর