মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী হুমায়রা সুলতানা জন্ম থেকেই দুই হাত না থাকলেও লেখাপড়া, ছবি আঁকা ও সংগীতে অসাধারণ প্রতিভা প্রদর্শন করছেন। ৯ বছরের হুমায়রা—হিয়া নামে পরিচিত, পা দিয়ে লিখে ও আঁকতে সক্ষম।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তার শিক্ষার পথে কখনো বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। স্থানীয়রা জানান, জন্ম থেকেই দুটি হাত না থাকায় অনেকেই মনে করেছিলেন হুমায়রা কখনো পড়ালেখায় সফল হবে না। কিন্তু মেয়েটির অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও মনোবল তার সীমাবদ্ধতাকে জয় করেছে। হুমায়রা ডান পায়ের আঙুলে কলম ধরে সাবলীলভাবে লিখে এবং ছবি আঁকে।
হুমায়রা জানায়, “আমি খেলতে পারি, গান গাইতে পারি, ছবি আঁকতে পারি, নাচতেও পারি। স্কুলে যেতে খুব ভালো লাগে। আমি বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই এবং গরিবদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেব।”
তার বাবা শেখ মো. আবদুল্লাহ বলেন, “দুই হাত না থাকা সত্ত্বেও তার মনোবল অপরিসীম। সে সব বিষয়ে খুবই প্রতিভাবান।”
বাবা-মায়ের সঙ্গে শিশু হুমায়রা | ছবি : খোলা কাগজ
শিক্ষকরা জানান, হুমায়রা পা দিয়েই লিখে এবং আঁকতে পারে, এমনকি স্মার্টফোনও চালাতে পারে। সহকারী শিক্ষক সেলিনা আক্তার বলেন, “প্রাথমিক পর্যায়ে ভর্তি হওয়ার পর দ্রুতই হুমায়রার মেধা প্রকাশ পায়। গান, আবৃত্তি ও চিত্রকর্মে সে সেরা।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, “হুমায়রার সুবিধার্থে শ্রেণিকক্ষে দুটি নিচু বেঞ্চ একত্রে সাজানো হয়েছে। সহপাঠীরা তাকে সাহায্য করে এবং শিক্ষকরা নিয়মিত খোঁজখবর নেন।”
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর দৈনিক খোলা কাগজকে জানান, “শিশুটি এখনও সরকারি কোনো সহযোগিতা পায়নি। পরিবার যদি সহযোগিতা চায়, সরকার তাদের পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও সাফল্যের পথে বাধা নয়, সঠিক প্রশিক্ষণ ও সহায়তায় কেউ অসাধারণ হতে পারে।”