গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি) বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস (বিএএস) ও যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) যৌথ অর্থায়নে তিনটি দানভিত্তিক গবেষণা প্রকল্পের উদ্বোধন এবং এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল বিএএস–ইউএসডিএ’র যৌথ উদ্যোগে শুরু হওয়া গবেষণা প্রকল্পগুলোর পরিচিতি তুলে ধরা এবং বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনা প্রদান। আয়োজকরা জানান, এ প্রকল্পগুলো কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও উৎকর্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. জি. কে. এম. মুস্তাফিজুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এবং বিএএস-এর সহযোগী সম্পাদক ও ফেলো।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন বিএএস ফেলো ও প্রকল্প মনিটর, গাকৃবি’র বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালক, অধ্যাপক ও গবেষকরা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (গবেষণা) প্রফেসর ড. মো. মাহিদুল ইসলাম মাসুম। এরপর অতিথিরা বক্তব্য দেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, লবণাক্ততা, রোগবালাই ও টেকসই উৎপাদন — কৃষিক্ষেত্রে এ চারটি বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গবেষণা ও উদ্ভাবনের বিকল্প নেই। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই প্রকল্পগুলো গবেষণাকে বাস্তব প্রয়োগের সঙ্গে যুক্ত করবে এবং প্রযুক্তিনির্ভর টেকসই কৃষি ব্যবস্থার পথ প্রশস্ত করবে।
প্রযুক্তিগত অধিবেশনে তিনজন প্রধান গবেষক তাঁদের গবেষণা প্রকল্প উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড. এম. এ. মান্নান (ধানে লবণসহিষ্ণুতা বৃদ্ধিতে ন্যানোম্যাটেরিয়ালের সংশ্লেষণ ও প্রয়োগ); প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান (চিংড়ির দুটি প্রধান রোগ শনাক্তে দ্রুত কার্যকর আরপিএ-ভিত্তিক ল্যাটারাল ফ্লো টেস্ট কিট উদ্ভাবন); প্রফেসর ড. এম. নজমুল হক (দুগ্ধ গবাদিপশুর মস্তাইটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে ভেষজ ও প্রোবায়োটিকের ব্যবহার)।
প্রত্যেকটি উপস্থাপনায় গবেষণার লক্ষ্য, কাঠামো, পদ্ধতি, প্রত্যাশিত ফলাফল এবং দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব কৌশল তুলে ধরা হয়। পরবর্তীতে উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণকারীরা গঠনমূলক মতামত প্রদান করেন, যা প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়ক হবে বলে আশা করা হয়।
অংশগ্রহণকারীরা মত দেন, এই কর্মশালা শুধু তিনটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রকল্পের সূচনা নয় বরং বাংলাদেশের কৃষি গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচনের অঙ্গীকার।
আয়োজকরা জানান, এই প্রকল্পগুলো দেশের পাশাপাশি বৈশ্বিক টেকসই কৃষি উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
কেকে/ আরআই