বিদ্যমান সার নীতিমালা বহাল রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নীলফামারীর ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নীলফামারী প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ) নীলফামারী ইউনিট এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশনের নীলফামারী ইউনিটের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ সরকার ও সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ও গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) কৃষি উপদেষ্টা সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা যায়, সার ডিলার নিয়োগ ও সার বিতরণ সংক্রান্ত সমন্বিত নীতিমালা ২০২৫ প্রণয়ন করতে যাচ্ছেন। এটাকে আমরা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত মনে করছি। কিন্তু, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি- ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে ডিলার নিয়োগের যে খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে- তা বিতরণ ব্যবস্থায় কখনো সুফল বয়ে আনবে না।’
অবকাঠামোগত ঘাটতি, পরিবহন ব্যবস্থার ঘাটতি ও আর্থিক নিরাপত্তাহীনতার কারণ উল্লেখ করেন তারা।
বক্তরা আরও বলেন, ‘কোনো নীতিমালা করার আগে মাঠ পর্যায়ে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাই, আমরা বিসিআইসি ও বিএডিসি কোনো বিভাজনে না গিয়ে সরকারের নীতিমালার আলোকে সুষ্ঠু সার সরবরাহের মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অধীনে সার বিতরণের প্রক্রিয়া কার্যকর করার দাবি জানাচ্ছি।’
‘দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বিসিআইসির সার ডিলাররা সুনামের সঙ্গে কৃষক পর্যায়ে সার ব্যবসায় পরিচালনা করে আসছে। কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগের মাধ্যমে ও নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদানের মাধ্যমে কৃষকের ফসল উৎপাদনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে। হঠাৎ করে কি এমন ঘটলো যে, ওয়ার্ড পর্যায়ে ডিলার নিয়োগ দিতে হবে। আমরা সরকারের এ জাতীয় সিদ্ধান্তের পুনঃবিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি।’
বক্তারা উল্লেখ করেন, খুচরা সার বিক্রেতা থাকবে না বলে বলা হচ্ছে। কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব হবে- তা আমাদের বোধগম্য নয়। কেননা এদের সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের মাধ্যমে প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকরা বিভিন্ন রকম সুবিধা পেয়ে থাকেন। এরা বিলুপ্ত হলে একটা শূন্যতা সৃষ্টি হবে। এ ব্যাপারে একটা গ্রহণযোগ্য সমন্বয় হওয়া প্রয়োজন।’
ব্যবসায়ীদের প্রাপ্য কমিশন বৃদ্ধি, ভ্যাট ও অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার এবং চাহিদা মাফিক বরাদ্দের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
এ সময় উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরে নীলফামারী জেলায় ইউরিয়া সারের চাহিদা ছিল ৮২ হাজার ৮১৭ মেট্রিক টন। সেখানে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪৭ হাজার ৫৬৯ মেট্রিক টন। একইভাবে টিএসপির ১৩ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টনের বিপরীতে ৬ হাজার ৪০৩ মেট্রিক টন, ডিএপি সারের ৩৯ হাজার ৭২ মেট্রিক টনের বিপরীতে ২৯ হাজার ৭৮৩ মেট্রিক টন ও এমওপি ৪১ হাজার ২৬৫ মেট্রিক টনের বিপরীতে ১৮ হাজার ৩৪ মেট্রিক টন বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর আগের বছর একই অবস্থা বিদ্যমান ছিল। চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহ পাওয়া গেলে সারের কোনো সংকট সৃষ্টি হবে না।
তারা জানান, নীলফামারী জেলায় বিসিআইসির ৭৫ জন ও বিএডিসি ১৩০জনসহ মোট ২০৫ জন সার ডিলার রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএফএর সহ-সভাপতি রজব আলী আহমেদ, চিত্ত সরকার, তাসলিম উদ্দিন, রশিদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক মো. আবুল কালাম, মাহমুদ আলম, কোষাধ্যক্ষ পলি রানী কুন্ডু।
কেকে/ এমএ