ছুটির দিনে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার যেন লোকে লোকারণ্য। বালিয়াড়ি থেকে শুরু করে নোনাজল সবখানে মানুষ আর মানুষ। পর্যটকরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মেতে উঠেছেন আনন্দ-উল্লাসে। তাতে, সাগরতীর পরিণত হয়েছে উৎসবের মিলনমেলায়। সেইসাথে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেতে উত্তাল সাগরে পর্যটকদের সতর্ক করছেন লাইফ গার্ড কর্মীরা।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত বালিয়াড়ি, নোনাজলসহ বিভিন্ন পয়েন্টে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা পর্যটকদের উপস্থিতি লক্ষ্য করার মতো।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুধু সুগন্ধা পয়েন্ট নয় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবনী, শৈবাল, কলাতলী সব পয়েন্টে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। ভ্রমণে এসে এসব মানুষ মেতেছেন নোনাজলে সমুদ্রস্নান, জেড স্কী, বিচ বাইক ও ঘোড়ার পিঠে। একই সঙ্গে প্রিয় মুহুর্তগুলো বন্দি করছেন ক্যামেরার ফ্রেমে।
সিলেট থেকে আসা পর্যটক আমিনুল ইসলাম বলেন, সাগর উত্তাল আছে। তারপরও খুব মজা হচ্ছে। কারণ বন্ধুরা সবাই মিলে এসেছি, খুবই উপভোগ করছি সাগর।
ঢাকার মিরপুর থেকে আসা পর্যটক সৈয়দ রেজা বলেন, কক্সবাজার ভ্রমণে আসতে আলাদা কোন উপলক্ষ্য লাগে না। যখনই মন খারাপ থাকে, তখনই কক্সবাজারে ছুটে আসি। কয়েকদিন সাগর, পাহাড়, কাঁকড়ার বিচরণ ও নৌকার সৌন্দর্য উপভোগ করে ফিরে যায়। কক্সবাজার আসলে প্রশান্তি খুঁজে পাওয়া যায়।
পর্যটক রিজিয়া ইসলাম বলেন, সাগর খুবই উপভোগ করি। তাই স্বামীকে নিয়ে কক্সবাজার ছুটে এসেছি। এখানে জেড স্কী, বিচ বাইক, ছবি তোলা আর নোনাজলে সমুদ্রস্নান করে আনন্দ-উচ্ছ্বাস করছি।
বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমনে চাঙ্গা সাগরপাড়ের ব্যবসা। সাগরপাড়ের ফটোগ্রাফার থেকে শুরু করে বার্মিজ পণ্যের দোকান সবখানে যেন ব্যস্ততার শেষ নেই।
বিচ বাইক চালক রাসেল চৌধুরী বলেন, বিপুল সংখ্যক পর্যটক এখন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। এসব পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই পরিবার নিয়ে বিচ বাইকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে আমাদের ব্যবসা হচ্ছে। কারণ শুক্রবার পর্যটক আসবে এই আশায় বসে থাকি আর পর্যটক এসেছে আয়ও হচ্ছে।
ঝিনুক ব্যবসায়ী মোহাম্মদ কামাল বলেন, পর্যটকরা বালিয়াড়িতে এসে দোকানে আসছে। তারা শামুক-ঝিনুক, পার্লের সামগ্রী কেনাকাটা করছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকার ওপরে বেচাবিক্রি হয়েছে।
৩ নম্বর সতর্ক সংকেতে উত্তাল সাগর। তাই সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের নিরাপত্তায় বালিয়াড়িতে টাঙানো হয়েছে লাল পতাকা। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে লাইফ গার্ড কর্মীরা।
সী সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার সিনিয়র লাইফ গার্ড কর্মী মো. রুহুল আমিন বলেন, লাখেরও বেশি পর্যটক এখন কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে। তাদের বেশির ভাগ পর্যটকই সমুদ্রস্নান করছে। কিন্তু সাগর উত্তাল, ঢেউয়ের তীব্রতাও বেশি। এতো মানুষের নিরাপত্তা দেয়া মুশকিল। তারপরও ৩টি পয়েন্টে সার্বক্ষনিক নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। চেষ্টা করে যাচ্ছি, সমুদ্রস্নানে পর্যটকদের নিরাপদে রাখা।
এদিকে সেন্টমার্টিনে চলতি বছরের নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে পর্যটন মৌসুম। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।
কেকে/ এমএস