৩২ দল থেকে বাড়িয়ে ২০২৬ বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে ৪৮ দলের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায়। কিন্তু ফিফার কাছে সম্ভবত ৪৮ দলের বিশ্বকাপও ছোট মনে হচ্ছে! তারা এরই মধ্যে ৬৪ দলের বিশ্বকাপের ধারণা টেবিলে উপস্থাপন করে ফেলেছ।
এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মিলিত হয়েছেন ফুটবলে বিশ্বের বড় কর্তারা। বিশেষ করে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনোর সঙ্গে এই সভায় হাজির ছিলেন লাতিন আমেরিকার (কনমেবল) ফুটবল কর্তারা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে এই বৈঠকে ছিলেন কনমেবল সভাপতি আলেহান্দ্রো ডমিঙ্গেজ এবং আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের ফেডারেশন প্রধানরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্যারাগুয়ের প্রেসিডেন্ট সান্তিয়াগো পেনা এবং উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট ইয়ামান্দু ওরসি।
৬৪ দেশের বিশ্বকাপেনর প্রস্তাবটি মূলত মার্চে উরুগুয়ের এক প্রতিনিধির মাধ্যমে ফিফা কাউন্সিলে উত্থাপিত হয়েছিল। এবার সরাসরি ইনফান্তিনোর কাছে এই ধারণা তুলে ধরলো কনমেবল। ডমিঙ্গেজ বৈঠকের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘আমরা একটি ঐতিহাসিক ২০৩০ বিশ্বকাপের স্বপ্ন দেখি! ধন্যবাদ জিয়ান্নি ইনফান্তিনো, আমাদের এই যাত্রায় সঙ্গ দেওয়ার জন্য। ফুটবল যখন সবার মধ্যে ভাগাভাগি হয়, তখনই আসল বৈশ্বিক উৎসব হয়।’
প্রথমবার ১৯৯৮ সালের পর বিশ্বকাপের ফরম্যাটে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। ২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকো আয়োজিত বিশ্বকাপে প্রথমবার অংশ নেবে ৪৮টি দল। আর ২০৩০ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করবে ছয়টি দেশ, তিন মহাদেশজুড়ে আয়োজন হবে এই টুর্নামেন্ট। এর মধ্যে উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়েতে হবে গ্রুপপর্বের ম্যাচ। স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কো আয়োজন করবে বাকি ম্যাচগুলো।
উরুগুয়ে ১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। শতবর্ষপূর্তির অংশ হিসেবে তারা অন্তত একটি ম্যাচ আয়োজন করবে।
প্রস্তাবিত পরিবর্তন কার্যকর হলে ২০৩০ বিশ্বকাপে অংশ নেবে ৬৪ দল এবং অনুষ্ঠিত হবে মোট ১২৮টি ম্যাচ। এর ফলে দক্ষিণ আমেরিকার ১০টি দেশ (কনমেবলের সদস্য) সরাসরি বিশ্বকাপে অংশ নেবে। লাতিন থেকে এখনও পর্যন্ত একমাত্র ভেনেজুয়েলাই বিশ্বকাপে কখনো খেলতে পারেনি।
তবে সমালোচকরা মনে করছেন, ৬৪ দলের বিশ্বকাপ মান কমিয়ে দেবে এবং বাছাইপর্বের গুরুত্ব হ্রাস করবে। ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার সভাপতি আলেকজান্ডার সেফেরিন এ প্রস্তাবকে ‘খারাপ ধারণা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
যদি ফিফা এই প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়, তবে এটি হবে শতবর্ষপূর্তির সবচেয়ে বড় বিশ্বকাপ আয়োজন। তবে মান ধরে রাখা এবং বৈশ্বিক ফুটবলের ভারসাম্য বজায় রাখা— এই দুটি বিষয়ই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্নচিহ্ন হয়ে সামনে আসছে।
কেকে/এজে