ঝিনাইদহের মহেশপুরে চাষ হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ব্রাজিল ও ফিলিপাইনের জনপ্রিয় ফল প্যাশন বা ট্যাং। তবে অঞ্চলভেদে এর ভিন্ন নামও আছে। অনেকে বলে আনারকলি আবার অনেকে বলে ট্যাং। দক্ষিণ আফ্রিকায় এটি পরিচিত পারপেল গ্রানাডিলা নামে। ফলটির বৈজ্ঞানিক নাম প্যাসিফ্লোরা ইডিউলাস। মিষ্টি স্বাদ ও উপকারিতার কারণে অনেক দেশেই ফলটি বেশ জনপ্রিয়।
তবে ঝিনাইদহ জেলার মাটিতে প্রথম এই ফলটি বাণিজ্যিকভাবে চাষ শুরু করেছেন জেলার মহেশপুর উপজেলার পান্তাপাড়া গ্রামের নুরুল হাসানের ছেলে তরুণ কৃষক মাহমুদুল হাসান স্টালিন।
জানা যায়, ৭ বছর আগে কৃষিকাজে জড়িয়ে পরেন স্টালিন। একে একে চাষ করতে থাকেন পেয়ারা, ড্রাগন, কমলা কুল, মাল্টা। ইউটিউবে দেখে আগ্রহ জাগে প্যাশন ফল চাষে। যশোর থেকে ৫টি চারা সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তার আড়াই বিঘা প্যাশনসহ ২৫ বিঘা জমিতে পেয়ারা, ড্রাগন, কমলা, কুল, মাল্টা রয়েছে।
মাহমুদুল হাসান স্টালিন বলেন, বাণিজ্যিকভাবে প্যাশন ফল আমি চাষ শুরু করেছি। এটি একটি লাভজনক চাষ। অল্প খরচে কোনো সার, সেচ, কীটনাশক ছাড়াই জৈব সার দিয়ে এটি চাষ করা যায়। শুরুতে আমি ৫টি চারা দিয়ে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু করি। বর্তমানে আড়াই বিঘা জমিতে প্যাশনসহ ২৫ বিঘা জমিতে ফলের চাষ রয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্যাশন গাছে বছরে দুবার ফল ধরে। প্রতি বিঘায় ১ লক্ষ ফল পাওয়া যায়। প্রতি পিচ ফল শুরুর দিকে ৫-৭ টাকা বিক্রি করলেও বর্তমানে ১৫-২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ফল বিক্রি কোন ঝামেলা নাই চিটাগাংয়ের ব্যবসায়ীরা জমি থেকে এসে নিয়ে যাচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ ফল গোলাকার বা ডিম্বাকার। কাঁচা অবস্থায় এটি সবুজ হয়। তবে পরিণত অবস্থায় হলুদ বা গাঢ় বেগুনি রং ধারণ করে। ফলটি অত্যন্ত পুষ্টিগুণসম্পন্ন। হাঁপানি ও ডায়াবেটিক রোগীদের জন্যও এই ফল বিশেষ উপকারী।
স্থানীয চাষি হালিম বলেন, এই ফলটি আমার ৭০ বছর বয়সে কখনো দেখিনি ষ্টালিন প্রথম আমাদের মাঠে চাষ করে। এই ফল কোথায় বিক্রি করবে কারা খাবে এটা ভাবতো কিন্তু এখন দেখছি ফল বিক্রি করার জন্য বাজারে নিয়ে যেতে হয় না। জমি থেকে ব্যাপারীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
সোহেল নামের আরেক চাষি বলেন, অল্প খরচে এই ফল চাষ করা যায় এবং দামেও বিক্রি করা যায়। সেজন্য আমি এই ফল চাষ করবো ভেবে স্টালিনের কাছে পরামর্শ নিচ্ছি।
এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরা ইয়াসমিন বলেন, ফলটি বিদেশি। কেউ এই ফল চাষে আগ্রহী হলে আমরা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করব।
কেকে/ এমএস