ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে বাজারে বর্তমানে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতাকে সরাসরি প্রভাবিত করছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রায় সব ধরনের সবজির দামই চড়া। হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধিতে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিক্রেতারা এর কারণ হিসেবে সংঘবদ্ধ অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন।
নবীনগর সদর বাজারের বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী, বিভিন্ন সবজির দাম সাধারণের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বর্তমানে শিম (সবুজ রঙের) প্রতি কেজি ২২০-২৩০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, মুলা ৬০-৬৫ টাকা, উস্তে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১১০-১২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৫০-৬০, বরবটি প্রতি কেজি ৬৫-৭০ টাকায় এবং কাকরোল প্রতি কেজি ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া লাউ প্রতি পিস ৬৫-৮০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকা, কচুর মুখি ৪০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির এই দাম বৃদ্ধি হঠাৎ হওয়ায় নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো দৈনন্দিন বাজার করতে হিমশিম খাচ্ছে।
বিক্রেতারা সবজির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি করছে কাঁচামরিচ, যার প্রতি কেজির দাম ২০০-২২০ টাকা এবং সিম প্রতি কেজি ২২০-২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এই আকাশছোঁয়া দামের কারণ জানতে চাইলে কয়েক জন বিক্রেতা জানান, বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে মরিচের গাছ নষ্ট হয়ে যায়; ফলে উৎপাদন কমে যায়। এ ছাড়া, এ সময় সিমের উৎপাদন কম হওয়ায় বাজারে চাহিদার তুলনায় যোগান কম, তাই দাম বেশি।
বর্তমানে কিছু কাঁচামরিচ ভারত থেকেও আমদানি করা হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
সবজির এমন ঊর্ধ্বগতিতে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গেছে। নবীনগর সদর বাজারে আসা ক্রেতা আলম মিয়া জানান, আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের আয় সীমিত, এত দাম দাম দিয়ে বাজার করা অসম্ভব। হঠাৎ করে সবজির দাম এত বেড়ে যাওয়ায় আমাদের বাজেট ভেঙে পড়েছে।
তবে স্বস্তির বিষয় হলো- আলুর দাম এখনো সাধারণ ক্রেতাদের নাগালে রয়েছে। যা প্রতি কেজি ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই কারণে ক্রেতারা কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন।
সবজির দাম এত বেশি কেন জানতে চাইলে খুচরা বিক্রেতা কামাল মিয়া বলেন, ‘পাইকারি বাজারেই দাম বেশি।’
বিক্রেতা মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘আমরা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে কিনলে, খুচরা বাজারেও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হয়। আমাদের তেমন লাভ থাকে না। তাদের মতে- এই দাম বৃদ্ধির মূল চাবিকাঠি পাইকারি বাজারের উপর নির্ভর করে।’
সংশ্লিষ্টদের মতে, সরবরাহ চেইন ব্যবস্থাপনার ত্রুটি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের (অতি বৃষ্টির) কারণে উৎপাদন হ্রাসের ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
তবে দাম নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করেন বাজার বিশ্লেষকরা।
কেকে/এমএ