ঢাকার সাভার উপজেলায় বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পরিচয়ে প্রভাব খাটিয়ে একের পর এক অপকর্ম করার অভিযোগ ওঠেছে। উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক রুবেল শেখের বিরুদ্ধে বাড়ইপাড়া এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, সামাজিক প্রতিষ্ঠান দখলসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, রুবেল শেখ নামের ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করছেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, তার বিরুদ্ধে মুখ খুললেই হুমকি ও হয়রানির শিকার হতে হয়।
আবুল বাসার নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘বাড়ইপাড়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে আমাদের ৮২ শতাংশ জমি রুবেল শেখ ভুয়া দলিল বানিয়ে দখল করে নিয়েছে। আমরা আদালতে মামলা করেছি। কিন্তু আজও জমি ফেরত পাইনি। এখন ওখানে একটা কোম্পানির সাইনবোর্ড ঝুলানো আছে।’
রুবেল শেখের বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, ‘আমার তিনটা কারখানার ঝুট জোর করেই নিয়ে যায় রুবেল। কারখানায় হামলা হয়েছে। এখন আবার কারখানার সামনে তার লোক বসিয়ে রাখে। ওর ভয়ে কেউ কথা বলে না। এমনকি সংবাদ মাধ্যমেও ঠিকভাবে কিছু প্রকাশ হয় না।’
স্থানীয়রা জানান, আশার আলো যুব সমিতি ক্লাব একসময় নির্দলীয় ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত। ৫ আগস্টের পর ক্লাবটি দখলে নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের অফিস বানানো হয়েছে। দখলের পর তার লোক ছাড়া অন্য সদস্যদের ক্লাবে ঢুকতে না দেওয়া হয় না।
অভিযোগ রয়েছে, সড়কের পাশের ফুটপাত, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির দোকান, এমনকি ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের একটি পুরোনো অফিসও দখল করে সেখানে বাণিজ্যিক দোকান করে ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, বাড়ইপাড়া-পল্লী বিদ্যুৎ রুটে চলাচল করা অন্তত ২০০টি অটোরিকশার চালকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করা হয়। ফুটপাতে বসা হকারদের কাছ থেকেও মাসিক ভিত্তিতে অর্থ আদায় করা হচ্ছে।
শিমুলিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘দলের কেউ যদি নাম ব্যবহার করে বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
স্থানীয় আরেক নেতা বলেন, ‘ব্যক্তিস্বার্থে দলের নাম ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই সাংগঠনিকভাবে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে রুবেল শেখ বলেন, ‘আমি কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত না। আমি ক্লাবের একজন সদস্য। সেখানে গেলে কি সেটা অপরাধ? আর জমির মালিক মারা গেছেন, তার ছেলে মামলা করেছেন। আমি ওখানে জড়িত না।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, রুবেল শেখের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কেউ কথা বলতে পারেন না। কেউ প্রতিবাদ করলে প্রাণনাশের হুমকি, মিথ্যা মামলা কিংবা পুলিশের ভয় দেখানো হয়। এলাকাবাসী প্রশাসনের কাছে দ্রুত হস্তক্ষেপ ও সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
তারা চান, এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।
কেকে/এমএ