সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার চৈত্রহাটি বাজারে ফেয়ার প্রাইস কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিক্রির দায়িত্ব প্রাপ্ত ডিলার আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়, সরকার প্রতি বছর পাঁচবার ফেয়ার প্রাইসের চাল নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে বিতরণ করে থাকে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ডিলার হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন বিএনপি নেতা আমিরুল ইসলাম। পরবর্তীতে চৈত্রহাটি বাজারে আওয়ামী লীগের এক নেতার ডিলারের গোডাউন নিজের নামে দেখিয়ে এবং ধান-চাল ও গমের ব্যাবসা না করেও ভুয়া কাগজ তৈরী করে উপজেলায় আবেদন করেন তিনি। পরে ডিলারের অনুমোদন নেন আমিরুল। ডিলার হওয়ার পর থেকেই চাল বিতরণে নানা অনিয়ম শুরু করেন তিনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তিনি নিজের ক্যাডার বাহিনীর মাধ্যমে চাল বিতরণে পরিমাণ কম দেন। কখনো চাল না দিয়ে নগদ টাকা দেন, আবার কখনো সুবিধাভোগীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাল না দিয়ে হয়রানি করেন। এছাড়া তিনি সুবিধাভোগীদের চাল নিজের কাছে রেখে উত্তলণ দেখিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করেন।
অভিযোগ রয়েছে, সরকার প্রদত্ত সহায়তার চাল তার নিজস্ব লোকদের মাধ্যমে কম দামে কিনে পরে গোডাউনে মজুত চালের সঙ্গে মিশিয়ে কালোবাজারে বিক্রি করেন। এই কালোবাজারি সিন্ডিকেটে রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের নেতা বাকিরুল ইসলাম, বিএনপির সাবেক ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান ও চৈত্রহাটি গ্রামের রাসেলসহ ১০-১২ জন সক্রিয় রয়েছেন।
সুবিধাভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, টাকা দিয়ে চাল কিনেও ওজন কম পাই, চালের পরিবর্তে ওই চালের নাম মাত্র মূল্যে টাকা দেয়। আমরা গরীব মানুষ, আমাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে। আবার চাল নিতে গেলে অনেক সময় হয়রানি করেন। আমিরুল ইসলামের প্রভাবের কারণে অনেকেই মুখ খুলতে সাহস পান না। ক্ষোভ প্রকাশ করে স্থানীয়রা বলেন, আগে যা ছিলাম, এখন আরও খারাপ অবস্থায় আছি।
ভুক্তভোগীরা বলেন, এইভাবে চলতে পারে না। যারা গরিব মানুষের হক মেরে খায়, তারা কোনো দলের নেতা হতে পারে না। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আমিরুল ইসলামের মুঠোফোনে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সালেহ্ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য, আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে এর আগেও চৈত্রহাটি মন্দিরের জায়গা দখল, ইউনিয়নের বিভিন্ন পুকুর দখল, মাছ লুট, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগে ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে বহিষ্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
কেকে/ আরআই