দুইটি মামলায় চার্জশীট দেওয়ার পরে এবার নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনায় দায়ের করা ৫টি হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। মামলার বাদীকে খুঁজে না পাওয়া, একই ঘটনায় ২ থানায় মামলা দায়ের ও সংশ্লিষ্ট থানায় ঘটনাস্থল না হওয়ার কারণে মামলাগুলোতে প্রতিবেদন দাখিলের সব প্রস্তুতি শেষে তা অনুমোদিত হয়েছে।
প্রতিবেদন দেওয়া মামলাগুলো হচ্ছে- সিদ্ধিরগঞ্জ থানার রাকিব হত্যা মামলা, ফতুল্লার রিয়াজ হত্যা মামলা, একই থানার কিশোর ইব্রাহিম হত্যা মামলা, সোনারগাঁ থানার কিশোর জনি হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলা ও একই থানার ইব্রাহিম হত্যা মামলা।
জেলা পুলিশের একটি সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে। তবে পরবর্তী সংশ্লিষ্ট থানায় পুনরায় মামলাগুলো রুজু করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে মারা যায় ভোলার চরফ্যাশন এলাকার হাশেম মিয়ার ছেলে রাকিব। এই ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। একই ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা হয়। পরে তদন্তে বিষয়টি ধরা পড়ে। প্রকৃত ঘটনাস্থল যাত্রাবাড়ি হওয়ায় সিদ্ধিরগঞ্জের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। শেষে এই ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করে পুলিশ।
একইভাবে আন্দোলন চলাকালে ভোলার দৌলতখাঁন উপজেলার আব্দুর রবের ছেলে রিয়াজ মারা যাওয়ার ঘটনায় ফারজানা নামের এক নারী বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা করেন। তদন্তে জানা যায়, বাদীর সঙ্গে নিহতের কোন সম্পর্ক নেই এবং বাদী মামলা পরবর্তী কার্যক্রম চালাতে অনীহা প্রকাশ করে। উপরন্তু ঘটনাস্থলও অন্য থানায় উল্লেখ করে পুলিশ প্রতিবেদন দেয়। পরে নিহতের পিতা আব্দুর রব বাদী হয়ে এই ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় নতুন করে মামলাটি দায়ের করেন।
আন্দোলনের সময় নিহত হয় কিশোর ইব্রাহিম সিলেট কোতোয়ালী হানিফ মিয়ার ছেলে। ঘটনাস্থল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী হলে প্রথমে ফতুল্লায় একটি ও পরে সোনারগাঁয় অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু তদন্তে প্রকৃত ঘটনাস্থল যাত্রাবাড়ী বলে দুইটি মামলাতেই প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। পরবর্তী ভিকটিমের মামা সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
অন্যদিকে ‘ঘটনাস্থল’ সোনারগাঁয় নয়, সিদ্ধিরগঞ্জে- এমন প্রতিবেদন দেওয়া হয় সোনারগাঁয়ের জনি হত্যা ও বিস্ফোরক মামলায়। জনি (১৭) সোনারগাঁয়ের ইয়াসিন মিয়ার ছেলে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় কাঁচপুর ব্রীজের পাশে গুলিতে প্রাণ হারায়।
প্রথমে সোনারগাঁ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। পরে নিহতের পিতা ইয়াসিন মিয়া বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী জানান, নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় ৪৮টি হত্যা মামলা, হত্যাচেষ্টা ও অন্যান্য ঘটনায় আরও ৫২টি মামলা রয়েছে। এই ১০০টি মামলার তদন্তে সর্বোচ্চ গুরত্ব দেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে দুইটি মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশীট) দেওয়া হয়েছে। যথাসময়েই বাকি মামলাগুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/ এমএ