গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারগুলোতে লাফিয়ে বাড়ছে কাঁচামরিচসহ শাক-সবজির দাম। গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজি কাঁচামরিচে ১০০ টাকা বেড়ে তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ দরে। একই সঙ্গে শাক-সবজিও ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
বর্তমানে কাঁচা তরকারি বাজারে এসে অস্থির হয়ে উঠছেন সাধারণ ভোক্তারা। ফলে শ্রমজীবী খেটে খাওয়া মানুষরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। এসব পণ্য কিনতে তাদের মাঝে শুরু হয়েছে হাঁসফাঁস।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) সরেজমিনে সাদুল্লাপুর ও ধাপের হাটসহ বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে- প্রতি কেজি মূল্য ৫০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, তরই ৫০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, কদোয়া ৩০ টাকা, পেঁপে ১৫ টাকা, কাঁকরোল ৪০, সজিনা ১২০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ শাক ৩০ টাকা, ধনেপাতা শাক ৮০. টাকা, লাল শাক ৩০০ টাকা ও লাউ ৪০-৫০ টাকা পিস (প্রকার ভেদে) বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত দুই সপ্তাহ আগে ওইসব পণ্যের দাম অনেকটা কম ছিল। তবে আলু, মুখী, কচুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, একসময় সাদুল্লাপুর উপজেলাটি মঙ্গা পিঁড়িত হিসেবে পরিচিত ছিল। এই মঙ্গা দূরীকরণে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী আয়বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সেই মঙ্গা নামটি ঘুচিয়ে সচ্ছলতা ফিরেছে সকল পেশা-শেণির মানুষের।
এরই মাঝে দফায় দফায় ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক দামে সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে ফের শুরু হয়েছে নীরব দুর্ভিক্ষ। সেই সঙ্গে নদীবেষ্টিত মানুষের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেন নিত্যসঙ্গী। এর প্রভাবে মধ্যবিত্ত ও স্বল্প আয়ের পরিবারগুলো চরম আর্থিক সংকটে পড়ে। দিনদিন তাদের ব্যয় বাড়লেও, বাড়ছে না আয়-রোজগার। ফলে সংসার চলাতে হাঁসফাঁস উঠেছে তাদের। অস্থির এই বাজার নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের সঠিক তদারকি না থাকলে সাধারণ মানুষ আরো বেকায়দায় পড়তে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
বাজারে সবজি কিনতে আসা আজাদুল ইসলাম নামের এক অটোভ্যানচালক জানান, যেভাবে মরিচ-সবজির দাম বেড়েছে, সেতুলনায় আয় বাড়েনি তার। এতে করে পরিবারের চাহিদা পূরণে বাড়ছে ঋণের বোঝা।
সাদুল্লাপুর বাজারের সবিজ বিক্রেতা রাজু মিয়া বলেন, চলতি বর্ষায় কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে কৃষকদের খেতে শাক-সবজির উৎপাদন কমেছে। এতে করে আমদানির চেয়ে চাহিদা বেশি থাকায় এসব পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মন জানান, বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
কেকে/এএস