রংপুরের তারাগঞ্জে গণপিটুনিতে নিহত রুপলাল দাসের মেয়ের বিয়ের জন্য ৭০ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছে উপজেলা বিএনপি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শিপু রুপলালের স্ত্রী ভারতী রানী ও তার সন্তানদের হাতে অনুদানের টাকা তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন চৌধুরী ও কোবায়েদ হোসেনসহ বিএনপি স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান শিপু বলেন, রুপলাল খুব ভালো মানুষ ছিলেন। মব সৃষ্টি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। যে দলের লোকেরা তাকে হত্যা করুক না কেন আমরা হত্যাকারীদের বিচার চাই। আজ বিএনপির পক্ষ থেকে রুপলালের পরিবারকে তার মেয়ের বিয়ের জন্য ৭০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হলো। এর আগেও সৎকারের ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও এ পরিবারের পাশে থাকবো।
এর আগে দুপুর ১২ টায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম রুপলালের বাড়িতে যান। রুপলালের মেয়ের বিয়ের সময় সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের ঘনিরাপুর এলাকার মুচি রুপলাল দাসের মেয়ে নুপুর রানীর বিয়ে কথা বার্তা চলছিল মিঠাপুকুরের শ্যামপুর এলাকার লালচাঁদ দাসের ছেলে ডিপজল দাসের সঙ্গে। গত রোববার বিয়ের দিন তারিখ ঠিক করার কথা ছিল। এ জন্য মিঠাপুকুর থেকে নিজের ভ্যান চালিয়ের রুপলালের ভাগিন জামাই প্রদীপ লাল শনিবার ঘনিরামপুর গ্রামে রুপলারেল বাড়ির দিকে রওনা হয়। কিন্তু গ্রামের ভেতর দিয়ে রাস্তা না চেনায় প্রদীপ লাল কাজীরহাট এলাকায় এসে রুপলালকে ফোন করে। সেখানে রুপালাল গিয়ে দুইজনে ভ্যান চড়ে ঘনিরামপুর গ্রামের দিকে রওনা হয়। শনিবার রাত ৯টার দিকে তারাগঞ্জ-কাজীরহাট সড়কের বটতলা এলাকায় পৌঁছালে তাদেরকে কয়েকজন যুবক তাদের চোর সন্দেহে আটক করে। প্রদীপ লালের ভ্যানে থাকা বস্তা থেকে কয়েকটি প্লাস্টিকের ছোট স্পিড ক্যানের বোতল ও ওষুধ বের করেন তারা। একপর্যায়ে তাদের চোর আখ্যা দিয়ে গণপিটুনি দেন। এতে দুজনই মারা যান।
এ ঘটনায় রুপলাল দাসের স্ত্রী বাদী হয়ে ৫০০ থেকে ৭০০জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে তারাগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ভিডিও দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করে তিন দিনের রিমান্ড নেন। এ ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে দুই এসআইসহ ৮ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
কেকে/ এমএস